প্রাক্তন IPS-র উদ্যোগে গড়ে উঠেছে ৮০টি নৈশ স্কুল, অন্ধকারেও আশার আলো ঝাড়খন্ডের আদিবাসী এলাকায়

ওরাওঁ ১৯৯২ সালের আইপিএস ব্যাচের অফিসার। অনুভব করেছিলেন যে বড় কিছু করতে তাঁর রাজ্যে ফিরে আসা উচিত। ২০১৪ সালে তিনি VRS নেওয়ার পরে ঝাড়খণ্ডে ফিরে আসেন।
নৈশ স্কুল চলছে
নৈশ স্কুল চলছে ছবি - সংগৃহীত
Published on

ঝাড়খণ্ডের তিনটি জেলা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ৮০টি গ্রামের শিশুদের সন্ধ্যা কাটে এক অনন্য উপায়ে। সূর্য অস্ত যাওয়ার সাথে সাথে পাটের চাটাই বিছিয়ে দেওয়া হয়, বাতি জ্বলে ওঠে এবং শিশুদের স্কুল শুরু হয়। স্কুলের তথাকথিত পড়াশুনা হয় না অথবা হোমওয়ার্ক নেওয়াও হয় না। তবে এটি আড়াই ঘন্টা ধরে চলে নাচ, গান, খেলাধুলা, কম্পিউটার শিক্ষা,ইন্টারনেটের উপর প্রশিক্ষণ, বিতর্ক সহ আরও অনেক কিছু।

শিক্ষা বিনামূল্যে। এই নতুন ধরণের স্কুল চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল পাঁচ-ছয় বছর আগে। মূল উদ্যোক্তা প্রাক্তন পাঞ্জাব পুলিশের আইজি ডঃ অরুণ ওরাওঁ। বর্তমানে, রাজ্যের তিনটি জেলা - রাঁচি, লোহারদাগা, এবং গুমলাতে এই জাতীয় ৮০ টি স্কুল রয়েছে।

ওরাওঁ ১৯৯২ সালের আইপিএস ব্যাচের অফিসার। অনুভব করেছিলেন যে বড় কিছু করতে তাঁর রাজ্যে ফিরে আসা উচিত। ২০১৪ সালে তিনি VRS নেওয়ার পরে ঝাড়খণ্ডে ফিরে আসেন। ডাঃ ওরাওঁ বলেন, যে ভিআরএস নেওয়ার পরে তিনি তার বাড়িতে কিছু ছাত্রকে পড়াতে শুরু করেছিলেন। তখন তিনি মনে করেন গ্রামের বাচ্চাদের জন্য কিছু করবেন যাতে তারা আরও ভালো শিক্ষা পায়।

এরপর রাঁচির উছারি গ্রামে ‘বাবা কার্তিক ওঁরাও নাইট স্কুল’ চালু হয়। কার্তিক ওরাওঁ ঝাড়খণ্ডের একজন রাজনৈতিক হেভিওয়েট ছিলেন এবং একজন সাংসদ ছিলেন। স্কুলগুলোর জন্য কোনো সরকারি বা কর্পোরেট তহবিল নেওয়া হয়নি। ব্যক্তিগত পর্যায়ে, সচ্ছল মানুষ এবং জনপ্রতিনিধিরা কিছু সাহায্য করেন। এই স্কুলগুলি আদিবাসী বিকাশ পরিষদ দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হয়। ২০১৪ সালে উছড়ি গ্রাম থেকেই শুরু হয় অনিল ওরাওঁ স্বপ্নের স্কুল।

অনিল বলেন, প্রথম দিনে ৩ জন ছেলেমেয়ে যোগ দিয়েছিল। সাত থেকে দশ দিনে ৪০ জন ছেলেমেয়ে যোগ দেয় আমাদের স্কুলে। আর আজ ২০০ জন ছেলেমেয়ে স্কুলে আসে। যেখানেই একটি স্কুল খোলা হয়, কলেজগামী যুবক বা স্নাতক পাস করা ব্যক্তিরা এগিয়ে আসেন কাজ করার জন্য। প্রতিটি স্কুলে পাঁচ থেকে দশজন শিক্ষক রয়েছে। এই ধরনের ৮০ তম স্কুল খোলা হয়েছে রাঁচির কুমহারিয়ান গ্রামে। মোট ৮০ টি স্কুলে এখনও পর্যন্ত ৪০০০ বাচ্চা পড়াশোনা করে।

এমন চারটি স্কুলে কম্পিউটার দেওয়া হয়েছে, যেখানে প্রজেক্টরের মাধ্যমে ডিজিটাল ক্লাস শুরু হয়েছে। অনেক স্কুলে লাইব্রেরি খোলা হয়েছে। গত দুই বছরে, যখন কোভিডের কারণে স্কুল-কলেজ বন্ধ ছিল, তখন এই নৈশ স্কুলগুলি কোভিড প্রোটোকল মেনে খোলা ছিল বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।

নৈশ স্কুল চলছে
Forbes India-র প্রভাবশালী মহিলাদের তালিকায় ওড়িশার আদিবাসী আশাকর্মী মাতিলদা কুল্লু

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in