কোভিড নয়, বিশ্বে অনাহারে বেশি মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। ২০২০ সালে ১৩২ মিলিয়নের বেশি মানুষ অনাহারের শিকার। অন্যান্য শতকের থেকে বেশি মানুষ এবছর অনাহারের শিকার হতে চলেছে। মহামারীর কারণে খাদ্যের অভাব, ক্রমশ পড়তে থাকা অর্থনীতি, জনগণের কেনার ক্ষমতা কমে যাওয়ার ফলেই অনাহারের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে চলেছে। বছরের শেষের হিসাব খতিয়ে দেখলেই দেখা যাবে, কোভিড-১৯ সংক্রমণের থেকে বেশি মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছে। সম্প্রতি ব্লুমবার্গে এই সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
ওই প্রতিবেদন অনুসারে, চ্যারিটি অক্সফ্যাম ইন্টারন্যাশনালের সমীক্ষায় বলা হয়েছে এই বছরের শেষে গড়ে প্রতিদিন ১২ হাজার মানুষ অনাহারে মারা যাবার সম্ভাবনা। যার সবটাই কোভিড জনিত পরিস্থিতির কারণে।
বিশ্বব্যাপী খাদ্য উদ্বৃত্তের পরিমাণ কমতে থাকায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে চলেছে। নতুন পর্যায়ে খাদ্য সুরক্ষারও বিঘ্নিত হতে চলেছে বিশ্বজুড়ে। নিউইয়র্কের কুইন্সে, একটি শস্য ব্যাংকের চারপাশে আট ঘণ্টা লাইন দিয়েছে গ্রাহকরা। কারণ, লোকেরা এক সপ্তাহের রেশন সরবরাহের বাক্স পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করে। যখন ক্যালিফোর্নিয়ায় কৃষকরা লেটুস শাক ফলানোর চেষ্টা করছেন, তখন ওয়াশিংটনের গাছের ফল পচে গিয়েছে। উগান্ডায়, কলা এবং টমেটো খোলা-বাজারের বাজারগুলোতে জমা করা হলেও ক্রেতাদের কেনার ক্ষমতা না থাকায় সেগুলো বাজারেই পচে নষ্ট হয়েছে। ফিলিপিন্স, চিন এবং নাইজেরিয়ার লজিস্টিকাল জ্যামের পরে চলতি বছরের গোড়ার দিকে বন্দরে চাল ও মাংস আনা হয়েছিল। দক্ষিণ আমেরিকা, ভেনেজুয়েলাতে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে।
ড্রেক্সেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হাঙ্গার ফ্রি কমিউনিটির ডিরেক্টর মারিয়ানা ছিলটন জানিয়েছেন, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এই সংকট তৈরি হয়েছে। আগামী ২১২০ সালেও এই সংকট নিয়েই আলোচনা করতে হবে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা আরিফ হুসেন জানিয়েছেন, বর্তমান এই সমস্যা সাম্প্রতিক সময়ের এক গুরুতর সমস্যা। যা শারীরিক এবং অর্থনৈতিক ভাবে মানুষকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। মানুষ খাবার জোগাড় করতে পারছে না।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন