গৌরী লঙ্কেশ - এক নৃশংস হত্যাকান্ডের চতুর্থ বছর

গৌরী লঙ্কেশ
গৌরী লঙ্কেশ ফাইল ছবি সংগৃহীত
Published on

২০১৭র ৫ সেপ্টেম্বর নিজের বাড়ির সামনেই আততায়ীদের গুলিতে নিহত হন সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশ। আজ তাঁর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী। উগ্র দক্ষিণপন্থার ও উগ্র হিন্দুত্ববাদের কড়া সমালোচক গৌরী লঙ্কেশ এবং বিশিষ্ট সমাজকর্মী এম এম কালবুরগীকে একই বন্দুক দিয়ে গুলি করা হয়েছিলো বলে আগেই জানা গেছে।

গৌরী লঙ্কেশকে হত্যা করেছিলো দক্ষিণপন্থী সংগঠন সনাতন সংস্থার সদস্যরা। গৌরী লঙ্কেশ হত্যাকান্ডের তদন্তে নিযুক্ত স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম তাদের তদন্তের পর এই তথ্য প্রকাশ করে। গৌরী লঙ্কেশ হত্যাকান্ডের তদন্তকারী সিট সংস্থা এই ঘটনায় ৯,২৩৫ পাতার চার্জশিটে মোট ১৮ জনকে অভিযুক্ত করেছে। সিট আরও জানায়, গৌরী লঙ্কেশের হত্যাকান্ড একটি সংগঠিত অপরাধ এবং তাঁকে হত্যা করার আগে পাঁচ বছর ধরে বেঙ্গালুরু, বেলগাঁও অঞ্চলে এর পরিকল্পনা করা হয়েছিলো।

সিটের চার্জশিটে অমল কালে, সুজিত কুমার এবং অমিত দেগওয়েকারকে এই হত্যাকান্ডের মূল চক্রী হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়। যে ঘটনা ঘটিয়েছিলো ২৬ বছর বয়সী পরশুরাম ওয়াগমারে। হত্যাকান্ডের দিন তাঁর ছবি গৌরী লঙ্কেশের বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজে পাওয়া গেছিলো।

২০১৮-৪ ১৮ জুলাই এই হত্যাকান্ডে সন্দেহভাজন হিসেবে ৫০ বছর বয়সী মোহন নায়েককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো দক্ষিণ কন্নড় জেলার সুল্লিয়া থেকে। এরপর পুলিশ গ্রেপ্তার করে অমিত বাড্ডি এবং গণেশ মিস্কিন নামের আরও দুই ব্যক্তিকে। এই দুই ব্যক্তির বাড়ি হুবলিতে। ২০১৮-র ২৩ জুলাই পুলিশ কোডাগু জেলার মাডিকেরি এলাকা থেকে ৫০ বছর বয়সী রাজেশ ডি বাঙ্গেরাকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তার হওয়া প্রথম দুই ব্যাক্তির মধ্যে অমিত বাড্ডি পেশায় স্বর্ণকার এবং গণেশ মিস্কিন পেশায় ধূপকাঠি প্রস্তুতকারক। এঁদের দুজনের বিরুদ্ধেই অল্প বয়সে খুন করা, অস্ত্র আইনে অপরাধ সহ অন্যান্য অভিযোগ ছিলো। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিলো এই ঘটনার মূল চক্রী পরশুরাম ওয়াঘমারে এবং মোহন নায়েক পরশুরামকে আশ্রয় দিয়েছিলো।

গৌরী লঙ্কেশের মৃত্যু প্রসঙ্গে সিটের তদন্তকারী অফিসাররা জানিয়েছিলেন, ২০১৭-র জুন মাসে গৌরী লঙ্কেশের হত্যার ঘটনায় অভিযুক্তদের একজনের কাছ থেকে একটি ডায়েরি উদ্ধার হয়। সেই ডায়েরি থেকেই বেশ কিছু তথ্য উদ্ধার করেন তদন্তকারী অফিসাররা। তাঁরা আরও জানিয়েছিলেন হত্যার তালিকায় দেবনাগরী হরফে ১ এবং ২ নম্বর দিয়ে গিরিশ কারনাড এবং গৌরী লঙ্কেশের নাম লেখা ছিলো।

জানা গেছে এই তালিকায় আরও নাম ছিলো রাজনীতিক সাহিত্যিক বিটি ললিতা নায়েক, বীরভদ্র চান্নামাল্লা এবং সি এস দ্বারকানাথ-এর। এঁরা প্রত্যেকেই উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের কড়া সমালোচক।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in