বিতর্কিত সিনেমা 'দ্য কেরালা স্টোরি' নিষিদ্ধ করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। এই পশ্চিমবঙ্গেই পাঁচ বছরে দেড় লক্ষ মহিলা নিখোঁজ হয়েছেন। কেন্দ্রীয় সংস্থা ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর (এনসিআরবি) সাম্প্রতিক রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে।
গণশক্তির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এনসিআরবি তাদের রিপোর্ট জানিয়েছে, ২০১৭ থেকে ২০২১, এই পাঁচ বছরে রাজ্য থেকে ১ লক্ষ ৪৮ হাজার ৭৭৬ জন মহিলা নিখোঁজ হয়েছেন। ২০১৭ সালে নিখোঁজ হয়েছেন ২৮,১৩৩ জন মহিলা। ২০১৮ এবং ২০১৯ সাল - দুই বছরই ৩১,২৯৯ জন করে মহিলা নিখোঁজ হয়েছেন। ২০২০ সালে ২৭,৪৩৪ জন এবং ২০২১-এ ৩০,৬১১ জন মহিলা নিখোঁজ হয়েছেন রাজ্যে।
এছাড়াও ২০১৬ সালে নিখোঁজ মহিলার সংখ্যা ছিল ২৪,৯৩৭ জন।
নারী পাচারের ক্ষেত্রেও পশ্চিমবঙ্গ দেশের মধ্যে সামনের দিকে রয়েছে। ২০১৭ থেকে ২০২১ - এই পাঁচ বছরে ৯৯২জন মহিলাকে পাচারের কেস থানায় নথিভুক্ত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে নাবালিকাই ছিলেন বেশি, ৬৮৩জন। রাজ্য পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, রাজ্যের থানাগুলিতে ২০১৭ সালে ৩৬৫ জন, ২০১৮-তে ২৪৪ জন, ২০১৯-এও ২৪৪জন, ২০২০-তে ৬১জন এবং ২০২১-এ ৭৮ জন মহিলাকে পাচারের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞদের অনুমান ২০২০ সালের পর থানাগুলি নারী পাচারের মামলার অভিযোগ নেওয়া কমিয়ে দিয়েছে।
রাজ্য পুলিশের এক আধিকারিক অবশ্য এই বিষয়ে বলেছেন, ‘‘নিখোঁজ মানেই পাচার নয়। কেউ ইচ্ছা করে নিখোঁজ হতে পারেন। কারও মানসিক স্থিতি ঠিক না থাকলেও নিখোঁজ হতে পারেন। এখন নিখোঁজ নিয়েই বিতর্ক চলছে।’’
২০১৯-র ৩ জুন এনসিআরবি, ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত নিখোঁজ হওয়া মহিলাদের নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল। তা মূলত ব্যাখ্যামূলক। সেই সময় এনসিআরবি-র ডিরেক্টর ছিল রামফল পাওয়ার। যেহেতু তিনি পশ্চিমবঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন, তাই সেই রিপোর্টে পশ্চিমবঙ্গ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ছিল। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৮ সালে মহিলা নিখোঁজের ক্ষেত্রে জেলাভিত্তিক তালিকায় শীর্ষে ছিল কলকাতা। এরপর ছিল যথাক্রমে নদীয়া, বারাসত, ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট, মুর্শিদাবাদ, ডায়মন্ডহারবার, পশ্চিম মেদিনীপুর, বারুইপুর জেলা, কোচবিহার এবং হাওড়া। ২০১৭ সালে এই তালিকায় বারাসাত ছিল শীর্ষে এবং কলকাতা ছিল ২ নম্বরে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন