চরমপন্থী আবহাওয়ার কারণে গত নয় মাসে ভারতে প্রায় তিনহাজার মানুষের প্রাণ গেছে। বুধবার এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য পেশ করেছে আবহাওয়া সংক্রান্ত স্বাধীন গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট (সিএসই)। রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম নয় মাস অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অন্তত ৮৬ শতাংশ দিন দেশের বিভিন্ন জায়গায় চরম প্রতিকুল আবহাওয়ার মুখে পড়েছে মানুষ। এর ফলে ওই নয় মাসে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৩ হাজার (২,৯২৩) ভারতবাসী।
প্রকৃতির উপর বেহিসেবী অত্যাচার, পরিবেশ উষ্ণায়ন ইত্যাদি নানা কারণে আজ বিশ্বের গোটা মানব সম্প্রদায় চরম বিপদের মুখে। ভারতেও এর প্রভাব কতখানি পড়েছে তা এই রিপোর্ট দেখেই স্পষ্ট। সিএসই–এর রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি বছর প্রথম নয় মাসে দেশের ২০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে, ৮০ হাজার বসতবাড়ি ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গিয়েছে, ৯২ হাজারেরও বেশি গবাদি পশু বেঘোরে প্রাণ হারিয়েছে। তবে সিএসই-র দাবি, সমস্ত তথ্য যদি আরও ঠিকভাবে পাওয়া যেত তাহলে এই সংখ্যাটা আরও বাড়ত।
রিপোর্ট পেশ করার পর সিএসই -এর ডিরেক্টর জেনারেল সুনীতা নারায়ণ জানান, ‘তথ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে ভারতে প্রকৃতি ও আবহাওয়া পরিবর্তনের অস্বাভাবিক চেহারা তুলে ধরা হয়েছে এই রিপোর্টে।‘ প্রকাশিত ওই রিপোর্টে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, মূলত কয়লা, তেল এবং গ্যাসের মতো জীবাশ্ম জ্বালানী পোড়ানোর ফলেই বিশ্ব উষ্ণায়নের সমস্যা প্রকট হচ্ছে। রিপোর্টে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, ভারতে আগের তুলনায় এখন আরও ঘন ঘন প্রকৃতির রোষ আছড়ে পড়বে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, গত নয় মাসে চরম প্রাকৃতিক দুর্যোগের সবচেয়ে বেশি সাক্ষী থেকেছে মধ্যপ্রদেশ (১৩৮ বার)। সর্বাধিক প্রাণহানি ঘটেছে বিহারে (৬৪২)। গবাদি পশুর সবথেকে বেশি মৃত্যু ঘটেছে পাঞ্জাবে। প্রবল প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে সর্বাধিক বাড়িঘর ভেঙ্গেছে হিমাচল প্রদেশে।
প্রসঙ্গত, এর আগে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার কমানোর লক্ষ্যে নানান সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একাধিক সম্মেলনে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে তাপমাত্রা কমানোর লক্ষ্যে উষ্ণায়নের জন্য দায়ী কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেনের মতো গ্রিন হাউস গ্যাসের নির্গমন অন্তত অর্ধেক করা উচিত বিশ্বের বিভিন্ন দেশগুলিকে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন