নিজেকে সাম্প্রদায়িক, বিভাজনের রাজনীতি থেকে দূরে রেখেছি বলেই এবারের নির্বাচনে আমাকে হেরে যেতে হয়েছে। অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুর কেন্দ্র থেকে পরাজিত হবার পর দলীয় এবং ব্যক্তিগত সমীক্ষা শেষে একথা জানিয়েছেন প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী।
নির্বাচনী বিশ্লেষকদের মতে, বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে একদিকে হিন্দু ভোটের বিভাজন হয়েছে এবং অন্যদিকে মুসলিম ভোট একজোট হয়েছে। যে কারণে এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী ইউসুফ পাঠানের কাছে পরাজিত হয়েছেন পাঁচ বারের কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী।
নিজের হার প্রসঙ্গে অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, “একদিকে বহরমপুর কেন্দ্রে হিন্দু ভোটের বিভাজন হয়েছে আর অন্যদিকে মুসলিম ভোট একজোট হয়েছে। আমি যেহেতু সচেতন ভাবেই নিজেকে কখনও হিন্দু বা মুসলিম বলে তুলে ধরিনি, কখনও বিভাজনের রাজনীতি করিনি, তাই এই দুয়ের মাঝে পড়ে আমাকে পিষ্ট হতে হয়েছে।”
বহরমপুর কেন্দ্রের নির্বাচনী ফলাফল বিশ্লেষণ করলে অধীর রঞ্জন চৌধুরীর বক্তব্যের সারবত্তা খুঁজে পাওয়া যাবে।
এই কেন্দ্রে এবার তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী, প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান পেয়েছেন ৫,২৪,৫১৬ ভোট। অন্যদিকে কংগ্রেস প্রার্থী অধীর পেয়েছেন ৪,৩৯,৪৯৪ ভোট। দুই প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান ৮৫,০২২ ভোট। এই কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী ডাঃ নির্মল চন্দ্র সাহা পেয়েছেন ৩,৭১,৮৮৬ ভোট।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিজেপি প্রার্থী ডাঃ সাহার প্রাপ্ত ভোটের বড়ো অংশটাই এসেছে অধীর চৌধুরীর হিন্দু ভোট ব্যাঙ্ক থেকে। অন্যদিকে ইউসুফ পাঠানের মুসলিম ভোট ব্যাঙ্ক অটুট থেকেছে।
এই কারণ ছাড়াও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড অধীর রঞ্জন চৌধুরীর সঙ্গে দূরত্ব বাড়ানোর কারণে এই লড়াই তাঁর পক্ষে আরও কঠিন হয়েছে। দীর্ঘ নির্বাচনী প্রচার পর্বে একবারের জন্যও অধীরের পক্ষে প্রচারে আসেননি রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বা মল্লিকার্জুন খাড়গের মত শীর্ষ কংগ্রেস নেতৃত্ব।
এই পরিস্থিতির সম্পূর্ণ সুযোগ নিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি নির্বাচনী পর্বে বারবার কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে ‘বিজেপির গোপন এজেন্ট’ বলেছেন।
- with IANS inputs
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন