ইনফোসিসের পর এবার আমাজনকে নজিরবিহীন আক্রমণ করলো RSS ঘনিষ্ঠ পত্রিকা পাঞ্চজন্য। আমাজনকে 'ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ২'-এর তকমা দিলো পত্রিকাটি। "দেশীয় উদ্যোগপতিদের জন্য এই কোম্পানি হুমকি স্বরূপ" বলে লেখা হয়েছে পত্রিকাতে।
পত্রিকার এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার কয়েক ঘন্টা পরেই আমাজনের তরফ থেকে এই রিপোর্টের বিরোধিতা করে একটি বিবৃতি জারি করা হয়, যেখানে কীভাবে এই ই-কমার্স ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উপকার করছে তা বলা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, "মহামারী পরিস্থিতিতে ৩ লাখ নতুন বিক্রেতা আমাদের সাথে যুক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সাড়ে চারশোরও বেশি শহরের ৭৫ হাজার স্থানীয় ছোট ছোট দোকানের মালিক রয়েছেন। যাঁরা আসবাবপত্র, স্টেশনারি, ইলেকট্রনিক্স, বিউটি প্রোডাক্ট, মোবাইল ফোন, পোশাক, মেডিক্যাল প্রোডাক্টস বিক্রি করে।"
কোটি কোটি 'মেড ইন ইন্ডিয়া' প্রোডাক্টস বিশ্বের নানা প্রান্তে তারা রপ্তানি করছে বলে বিবৃতিতে দাবি করেছে আমাজন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "আমাজনের রপ্তানি কর্মসূচি দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মেট্রো শহরগুলির পাশাপাশি দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির শহরগুলোতে ৭০ হাজারেরও বেশি রপ্তানিকারক রয়েছে। কোটি কোটি 'মেড ইন ইন্ডিয়া' প্রোডাক্টস বিশ্বের ২০০টি দেশের গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করছেন তাঁরা - যা আক্ষরিক অর্থেই বিশ্বব্যাপী।"
রবিবার পাঞ্চজন্যের এডিটর হিতেশ শঙ্কর পত্রিকার সাম্প্রতিক সংখ্যার ফ্রন্ট কভারের ছবি ট্যুইট করেছেন। যেখানে আমাজন সিইও জেফ বেজোসের ছবি রয়েছে এবং শিরোনামে লেখা রয়েছে - "#Amazon: East India Company 2.0"। এই ছবির সাথে হিন্দিতে তিনি লিখেছেন, "পাঞ্চজন্য মানে ভারতের কথা বলা। আগামী সংখ্যাতে পড়ুন - আমাজন কী এমন ভুল করেছে যাতে তাকে ঘুষ দিতে হয়েছে? কেন মানুষ এই বিশাল কোম্পানিকে দেশীয় উদ্যোক্তা, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এবং সংস্কৃতির জন্য হুমকি বলে মনে করে?"
পত্রিকার ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে একটি ভিডিও বার্তাও শেয়ার করেছেন হিতেশ শঙ্কর। যেখানে তিনি বলেছেন, "এটি একটি সত্যিকারের গল্প, যা পাঠকদের সামনে আমরা তুলে ধরেছি। কীভাবে একটি কোম্পানির কারণে ৪০ হাজারের বেশি দোকান বন্ধ হয়ে গেল, কীভাবে একটি কোম্পানি অনেক ছায়া কোম্পানির মাধ্যমে নির্বাচিত কয়েকটি ব্র্যান্ডকে প্রোমোট করছে তা তুলে ধরা হয়েছে এখানে। ভারতের বৈচিত্র্যকে ধ্বংস করার একটি দুষ্টচক্র এটা। সেই দুষ্টচক্রকে উন্মোচন করার চেষ্টা করা হয়েছে আমাদের কভার স্টোরিতে।"
এই প্রতিবেদনকে সমর্থন করেছে কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স বা CAIT। সংগঠনের সভাপতি বিসি ভারতীয়া আমজনের পাশাপাশি ফ্লিপকার্ট কোম্পানিকেও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দ্বিতীয় সংস্করণ হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসের শুরুতেই ইনফোসিসকে দেশবিরোধী বলে অভিযুক্ত করা হয় পাঞ্চজন্যতে। বলা হয়, 'টুকরে টুকরে গ্যাং', নকশালদের সাহায্য করছে ইনফোসিস।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন