নবান্নর ওপর মানুষের বিশ্বাস নেই। আর নবান্নের দালালদের ওপরেও বিশ্বাস নেই। অবিলম্বে গ্রেপ্তার হওয়া ছাত্র যুবদের নিঃশর্তে মুক্তি দিতে হবে। শনিবার আনিশ খান হত্যার প্রতিবাদে বামফ্রন্টের ডাকে কলকাতায় এক মিছিলের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একথা বলেন সিপিআই(এম) পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম। এদিন তিনি আরও বলেন, গতকাল যখন কবর চুরি করতে গেছে তখনই গ্রামবাসীরা খেপে গেছে। আমরা এতদিন পুকুর চুরি শুনেছি। এখন শুনছি কবর চুরি। আর পুলিশকে দিয়ে খুন করাচ্ছে, চুরি করাচ্ছে। আনিশ খানের খুনে যারা জড়িত ওসি, আইসি, এসপি সহ তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করতে হবে। তা নাহলে এটা হাওড়াতে থেমে থাকবে না।
শুক্রবার আনিশ খানের বাড়িতে বামফ্রন্ট প্রতিনিধিদল যাবার পর শনিবার আনিশ খান হত্যার ন্যায় বিচারের দাবিতে কলকাতায় মিছিলের ডাক দিয়েছিলো বামফ্রন্ট। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, মহম্মদ সেলিম, মনোজ ভট্টাচার্য, নরেন চ্যাটার্জি সহ বামফ্রন্ট নেতৃত্ব। কলকাতার হো চি মিন মূর্তির সামনে থেকে শুরু হয়ে এই মিছিল যায় ধর্মতলার লেনিন মূর্তি পর্যন্ত।
প্রসঙ্গত, আনিশ খান মৃত্যুকান্ডে ক্রমশই সুর চড়াচ্ছে বামেরা। আনিশ খানের মৃত্যুর পর গত কয়েকদিন থেকে একের পর এক বিক্ষোভ প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে রাজ্যজুড়ে। প্রতিদিন রাজ্যজুড়ে চলছে দফায় দফায় বিক্ষোভ অবরোধ। একদিকে যেমন আমতা থানার সামনে দোষীদের শাস্তির দাবিতে চলছে এসএফআই ডিওয়াইএফআই-এর লাগাতার অবস্থান, তেমনই প্রতিদিনই কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে সংগঠিত হচ্ছে বিক্ষোভ, অবরোধ, মিছিল। এদিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
শুক্রবার আনিশ খান মৃত্যুর যথাযথ তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি কলকাতার রাসবিহারীতে মিছিল করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন ময়ূখ বিশ্বাস, সৃজন ভট্টাচার্য সহ একাধিক বাম ছাত্র নেতা। গতকাল রাতেই লালবাজার থেকে আটক ছাত্র নেতৃত্বকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
গতকালের এই ঘটনার পর এদিনই অন্য এক আন্দোলন কর্মসূচীতে হাওড়া গ্রামীণ এসপি অফিসের সামনে দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভের ডাক দেয় এসএফআই ডিওয়াইএফআই। আনিস খানের হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে আজ হাওড়া গ্রামীণ এসপি অফিস অভিযান ছিল বাম ছাত্র-যুবদের। এদিন বিকেলে প্রচুর ছাত্র-যুব পতাকা নিয়ে মিছিল করে এসপি অফিসের দিকে এগিয়ে গেলে অফিসের কিছু আগেই তাঁদের ব্যারিকেড ঘিরে আটকে দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীরা জোর করে এগিয়ে যেতে চাইলে পুলিশের সাথে তাদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। বিক্ষোভকারীদের ওপর ব্যাপক লাঠিচার্জ করতে দেখা যায় পুলিশকে। অভিযোগ ফাটানো হয়েছে কাঁদানে গ্যাসের সেলও। সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় ও সোশ্যাল মিডিয়ায় হওয়া 'লাইভে' সেই দৃশ্য ধরা পড়েছে। গ্রেপ্তার করা হয় মীনাক্ষী মুখার্জি সহ বহু বাম ছাত্র কর্মীকে।
শনিবারের ঘটনার পর এক ভিডিও বার্তায় এসএফআই রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, এভাবে আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না। আগামীকাল রাজ্যের সর্বত্র গ্রামীণ থানা ঘেরাও করা হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন