সপ্তাহ দুই আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনার কেন্দ্রে ছিল কেরলের একটি ঘটনা। যেখানে হিন্দু না হওয়ার কারণে ভারতনাট্যম শিল্পী মানসিয়া ভি পিকে মন্দিরে অনুষ্ঠান করার অনুমতি দেয়নি মন্দির কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার কড়া সমালোচনা করেছিলেন নেটিজেনদের একাংশ। সেই মানসিয়াকেই নিজেদের দলীয় অনুষ্ঠানে পারফর্ম করার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে নেটিজেনদের কুর্নিশ কুড়োলো কেরলের শাসকদল সিপিআইএম।
সোমবার ত্রিশুরে সিপিআইএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই দ্বারা আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে পারফর্ম করলেন ভারতনাট্যম শিল্পী মনসিয়া ভিপি। এই জেলারই কুড়ালমানিক্যম মন্দিরে গত ২৯ মার্চ তাঁর নাচের অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়।
ডিওয়াইএফআই-এর অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে শিল্পী জানিয়েছেন, "মন্দির কর্তৃপক্ষ আমাকে মঞ্চ দিতে অস্বীকার করেছিল, এর প্রতিবাদ জানানোর জন্য নয়, আমি একজন শিল্পী হিসেবে এখানে পারফর্ম করছি। তবে ডিওয়াইএফআই এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমাজে একটি বার্তা পৌঁছে দিতে চায়। তারা বলতে চায় যে শিল্পের কোনো ধর্ম নেই, হয়না কখনো।"
মনসিয়া ভারতনাট্যমের একজন পিএইচডি রিসার্চ স্কলার। এক মুসলিম পরিবারে তাঁর জন্ম। মুসলমান হওয়া সত্ত্বেও শাস্ত্রীয় নৃত্যের চর্চা করার জন্য ইসলামিক ধর্মগুরুদের ক্রোধের শিকার হয়েছিলেন তিনি। সে কারণে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করেন তিনি। এক হিন্দু ব্যক্তিকে বিবাহ করেন।
কুড়ালমানিক্যম মন্দিরে নাচের অনুমতি না দেওয়া প্রসঙ্গে শিল্পী দু সপ্তাহ আগে জানিয়েছিলেন, মন্দির কমিটির তরফ থেকে তাঁর ধর্ম জানতে চাওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, ধর্মের ভিত্তিতে মঞ্চ বরাদ্দ করা হয়েছে। তিনি যদি হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করে থাকেন তাহলেই তাঁকে নাচের অনুমতি দেওয়া হবে। মন্দির কর্তৃপক্ষকে তিনি জানিয়েছিলেন তাঁর কোনো ধর্ম নেই। এরপরই অনুষ্ঠানের শিল্পী তালিকা থেকে তাঁর নাম বাদ দেওয়া হয়।
মানসিয়ার অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরই কেরালা ডিওয়াইএফআই-এর পক্ষ থেকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলা হয়েছিল তারা মনসিয়ার জন্য মঞ্চ প্রস্তুত করবে।
উল্লেখ্য, আগামী ২১ এপ্রিল কুড়ালমানিক্যম মন্দিরে এই অনুষ্ঠান হওয়ার কথা রয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন