'অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস' (ADR)-র রিপোর্টে উঠে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য। সেই রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে নির্বাচনী বন্ড থেকে প্রাপ্ত মোট অনুদানের ৭০ শতাংশেরও বেশি পেয়েছে বিজেপি। অনেক পিছিয়ে রয়েছে কংগ্রেস, পঞ্চম স্থানে।
এডিআর রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি মোট ৩৬৩ কোটি টাকা পেয়েছে ইলেক্টোরাল বন্ড বা নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে। মোট ৩৯টি ব্যবসায়ী ও কর্পোরেট সংস্থা ইলেক্টোরাল বন্ডের মাধ্যমে অনুদান দিয়েছে।
মোট অনুদানের মধ্যে বিজেপিই পেয়েছে ৭০.৬৯ শতাংশ। টাকার হিসেব করলে দাঁড়ায় ২৫৯ কোটি ৮ লক্ষ টাকা। দ্বিতীয় স্থানে আছে তেলেঙ্গানার কে চন্দ্রশেখর রাও-র 'ভারত রাষ্ট্র সমিতি' (BRS)। তারা পেয়েছে প্রায় ৯০ কোটি টাকা। যা প্রাপ্ত অর্থের ২৫ শতাংশের কাছাকাছি।
কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি ও ওয়াই এস আর কংগ্রেস পার্টির মিলিত প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ ১৭ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা। যদি টাকার পরিমাণের ভিত্তিতে স্থান ভাগ করতে হয় তাহলে তৃতীয় স্থানে আছে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেস পার্টি। চতুর্থ স্থানে রয়েছে দিল্লিতে ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টি। এবং পঞ্চম স্থানে কংগ্রেস।
উল্লেখ্য, ইলেক্টোরাল বন্ড বা নির্বাচনী বন্ড হল সুদ বিহীন বন্ড, প্রমিসরি নোট (Promissory Note) বা ডিমান্ড ড্রাফট (Demand Draft)-এর মতো। এই বন্ডগুলি বিভিন্ন মূল্যে পাওয়া যায়, যেমন ১ হাজার, ১০ হাজার, ১ লক্ষ, ১০ লক্ষ এবং ১ কোটি টাকার।
যে কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা এই বন্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক (SBI) থেকে কিনে চাঁদা হিসাবে তা রাজনৈতিক দলগুলিকে দিতে পারেন। পরে সেই বন্ডগুলি ভাঙিয়ে নিজেদের অ্যাকাউন্টে জমা করতে পারে রাজনৈতিক দলগুলি। তবে, আশ্চর্যের বিষয়, এই নির্বাচনী বন্ডগুলি (চাঁদা হিসাবে) কারা দিয়েছে, তা প্রকাশ করতে হয় না রাজনৈতিক দলগুলিকে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে বিজেপির মোট আয় ছিল প্রায় ২,৩৫৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৬১ শতাংশ, অর্থাৎ— প্রায় ১,৪৫০ কোটি টাকাই আসে নির্বাচনী বন্ড থেকে। ওই একই বছরে কংগ্রেসের মোট আয় ছিল ৫৫১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৬৯ শতাংশ, অর্থাৎ— প্রায় ৩৮৩ কোটি টাকা আসে নির্বাচনী বন্ড থেকে।
উল্লেখ্য, নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে ২০২১-২২ সাল পর্যন্ত সমস্ত রাজনৈতিক দল অনুদান পেয়েছে মোট ৯,১৮৮ কোটি টাকারও বেশি। যার মধ্যে ADR (অ্যাসোসিয়েশন অফ ডেমোক্রেটিক রিফর্মস)-এর তথ্য অনুসারে, বিজেপি এককভাবে এই অনুদানের ৫৭ শতাংশ পেয়েছে। কংগ্রেস পেয়েছে ১০ শতাংশের কিছু বেশি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন