তৃতীয় তৃণমূল সরকার গঠিত হয়েছে মাত্র এক বছর। এর মধ্যেই দলবদল করেছেন বিজেপির ৫ জন বিধায়ক। পদ্ম থেকে তৃণমূলে ফিরেছেন সকলেই। এরই মধ্যে জানা যাচ্ছে, অপেক্ষায় আছেন আরও একজন। ভাটপাড়ার বিজেপি বিধায়ক পবন কুমার সিং। সূত্রের খবর, ৩০ মে, উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগরে তৃণমূলের সমাবেশ যোগ দেবেন অর্জুন পুত্র পবন কুমার সিং। আর তা হলে, এ রাজ্যে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ৭৭ থেকে ৬৯-এ নেমে আসবে।
২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে ৭৭ আসনে জয়লাভ করে বিজেপি। সেই তালিকায় কোচবিহারের দিনহাটা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জেতেন নিশীথ প্রামাণিক এবং নদিয়ার শান্তিপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জগন্নাথ সরকার। তবে, আগে থেকেই দুজনেই পার্লামেন্টের সদস্য হওয়ায়, নিজেদের সাংসদ ছাড়তে চাননি। উপনির্বাচনে এই দুটি আসনে ক্ষমতা দখল করে তৃণমূল। ফলে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৭৫।
এরপর থেকেই বিজেপি ছেড়ে দলবদলের হিড়িক পড়ে যায় পশ্চিমবঙ্গে। বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ, বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায়, কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায় এবং রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী একে একে গেরুয়া শিবির ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হতে চলেছে ভাটপাড়ার বিধায়ক পবন সিংয়ের নাম।
গতকালই, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং। তার আগে পদ্ম শিবির ছাড়েন আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। ফলে বিজেপির সাংসদ সংখ্যাও ১৮ থেকে ১৬ নেমে এসেছে।
প্রসঙ্গত, জনগণের রায়কে উপেক্ষা করে দলবদলের একটা ট্র্যাডিশন চলছে এরাজ্যে। রাজ্যের শাসক দলের ক্ষমতার দম্ভ নিয়ন্ত্রণে যে মানুষেরা বিরোধীদের ভোট দিয়েছিল, তাঁদেরকে ধোঁকা দেওয়ার মনোভাব খুবই প্রকট হচ্ছে বিজেপি বিধায়কদের মধ্যে। দিন দিন সেই সংখ্যা বাড়ছে। আর এই পরিস্থিতিতে, বিজেপির রাজ্য কমিটির কঙ্কাল দশা বেরিয়ে এসেছে। অনেকেই রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কর্মকাণ্ড নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা ও দিলীপ ঘোষকে ঘিরেও কটাক্ষের সুর শোনা গেছে প্রাক্তন সতীর্থদের কাছে। ফলে দলের অন্দরে ফাটল বারে বারে ফুটে উঠেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরপরই রাজ্য বিজেপির মধ্যে চোরা স্রোত বইতে শুরু করে। সেইসঙ্গে, ‘তৃণমূলের লাঠিয়াল বাহিনী’ নির্বাচন পরবর্তীকালে বিরোধীদের উপর হিংসা চালিয়েছে বলে যে অভিযোগ করা হয়, সেখানে আক্রান্ত কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়নি দলের শীর্ষ নেতাদের। যার প্রভাব পড়েছে রাজ্য জুড়ে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন