মঙ্গলবার দেশজুড়ে ৭৬ জায়গায় অভিযান চালালো সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)। দেশের মোট ১৪ টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জুড়ে এই অভিযান চালানো হয়েছে। অনলাইনে শিশুদের যৌন নির্যাতন সম্পর্কিত নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়েছে।
অনলাইনে যৌন নির্যাতন এবং শিশুদের শোষণ সম্পর্কিত অভিযোগের ভিত্তিতে সিবিআই ১৪ নভেম্বর ৮৩ জন অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ২৩টি পৃথক মামলা নথিভুক্ত করেছে। সিবিআই-এর এক আধিকারিক জানিয়েছেন, "তদন্ত এখনও চলছে এবং ৭৬ টি জায়গায় এদিন তল্লাশি চালানো হয়েছে।"
এদিন তিরুপতি, কানেকাল (অন্ধ্রপ্রদেশ); দিল্লী; কোঞ্চ জালাউন, মাউ, চান্দৌলি, বারানসি, গাজিপুর, সিদ্ধার্থনগর, মোরাদাবাদ, নয়ডা, ঝাঁসি, গাজিয়াবাদ, মুজাফফরনগর (উত্তরপ্রদেশ); জুনাগড়, ভাবনগর, জামনগর (গুজরাট); সঙ্গরুর, মালেরকোটলা, হোশিয়ারপুর, পাতিয়ালা (পাঞ্জাব); পাটনা, সিওয়ান (বিহার); যমুনা নগর, পানিপথ, সিরসা, হিসার (হরিয়ানা); ভদ্রক, জাজাপুর, ঢেনকানাল (ওড়িশা); তিরুভালুরে, কোয়েম্বাটোর, নামক্কল, সালেম, তিরুভান্নামালাই (তামিলনাড়ু); আজমির, জয়পুর, ঝুনঝুনু, নাগৌর (রাজস্থান); গোয়ালিয়র (মধ্যপ্রদেশ); জলগাঁও, সালওয়াদ, ধুলে (মহারাষ্ট্র); কোরবা (ছত্তিশগড়); এবং সোলান (হিমাচল প্রদেশ) সহ প্রায় ৭৬টি স্থানে অভিযান চালানো হয়।
মামলাগুলি একটি সূত্র ভিত্তিক তথ্যের ভিত্তিতে নথিভুক্ত করা হয়েছিল। ভারত এবং বিদেশের বিভিন্ন অংশের ব্যক্তিদের নিয়ে একটি সিন্ডিকেট বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এবং অন্যান্য ক্ষেত্র ব্যবহার করে শিশু যৌন শোষণের উপাদান (CSEM) প্রচার, সংরক্ষণ এবং দেখার সঙ্গে জড়িত।
সিবিআই আধিকারিকদের মতে, "এই ধরনের ব্যক্তিরা লিঙ্ক, ভিডিও, ছবি, টেক্সট, পোস্ট শেয়ার করার মাধ্যমে এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতে এই ধরনের সামগ্রী পোষ্ট করার মাধ্যমে CSEM প্রচার করছে। এই কাজ করা হচ্ছে বিশেষত কোনো হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ এবং তৃতীয় পক্ষের স্টোরেজ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে।"
এফআইআর অনুসারে, এই চক্রে যুক্ত ৩১ জন সদস্য একে অপরের সাথে যোগসাজশে CSEM বিষয়বস্তু ছড়িয়ে দিচ্ছে।
সংগৃহীত প্রাথমিক তথ্য অনুসারে, ৫০ টিরও বেশি গ্রুপে ৫ হাজারের বেশি অপরাধী শিশু যৌন নির্যাতন সংক্রান্ত বিষয়বস্তু ছড়িয়ে দিচ্ছে। এসব গ্রুপের সঙ্গে বহু বিদেশি নাগরিকও যুক্ত। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, এই চক্রের সঙ্গে বিভিন্ন মহাদেশে ছড়িয়ে থাকা প্রায় ১০০ দেশের লোক জড়িত থাকতে পারে।
সূত্র অনুসারে, বিদেশী নাগরিকদের মধ্যে পাকিস্তান, কানাডা, বাংলাদেশ, নাইজেরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, আজারবাইজান, যুক্তরাজ্য, বেলজিয়াম, ইয়েমেন ইত্যাদি থেকে এসেছেন এবং অভিযানের সময় ১০ জন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে।
শিশু সুরক্ষা (POSCO) আইনের ১৪ ধারা এবং আইটি আইনের ৬৭বি ধারার অধীনে এই মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, বর্তমানে ভারতে ১৪ নভেম্বর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত শিশু সুরক্ষা সপ্তাহ পালন করা হচ্ছে। যা এক সহযোগিতামূলক আন্দোলন। যে আন্দোলনে শিশুদের যৌন নির্যাতনের সমস্যা মোকাবিলায় সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সম্মিলিত পদক্ষেপকে উত্সাহিত করবে।
অনলাইন শিশু যৌন নির্যাতন এবং শোষণ সম্পর্কিত বিষয়গুলির জন্য সিবিআই-তে 'অনলাইন শিশু যৌন নির্যাতন ও শোষণ প্রতিরোধ/তদন্ত (OCSAE)' নামে একটি বিশেষ ইউনিট তৈরি করা হয়েছে। বিভিন্ন সংস্থার সাথে সমন্বয় ছাড়াও, এই ইউনিট অনলাইন শিশু যৌন নির্যাতন ও শোষণ সংক্রান্ত বিভিন্ন অপরাধের তদন্ত করছে।
- with Agency Inputs
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন