ভারতীয় কিষান ইউনিয়ন (বিকেইউ) নেতা রাকেশ টিকায়েত যিনি রাজধানীর অদূরে গত ১০মাস ধরে কৃষকদের বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন, তিনি বলেছেন, সোমবারের ভারত বনধ (দেশজুড়ে ধর্মঘট) কেন্দ্রকে বাধ্য করবে কৃষকদের কথা শুনতে এ ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত। সংবাদ সংস্থাকে টিকায়েত বলেন,তাঁদের আশা এবারে সরকার তাঁদের দাবিগুলো শুনবে।
শুধুমাত্র উত্তরপ্রদেশের পশ্চিমের কৃষকরাই এই প্রতিবাদে শামিল হয়েছে এই ধারণা খারিজ করে দিয়ে তিনি বলেছেন, সারা ভারতের কৃষকরা তাঁদের সঙ্গে আছে। এই আন্দোলন একটি মাত্র অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ নয়। টিকায়েত আরও বলেন, বিক্ষোভ যতদিন চালাতে হয় চালানো হবে৷ তাঁরা পিছু হটবেন না।
প্রায় এক বছর আগে কেন্দ্র বিতর্কিত তিনটি কৃষি বিল আনে। যা পরবর্তী সময়ে আইনে রূপান্তরিত হয়। তারই প্রতিবাদে দিল্লী সীমান্তে প্রধানত পঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লীর কৃষকরা বিক্ষোভ অবস্থান করছে। বিলগুলি হল, ফারমার্স প্রোডিউস ট্রেড অ্যান্ড কমার্স (প্রোমোশন অ্যান্ড ফেসিলিটেশন) বিল ২০২০, ফারমার্স (এমপাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড প্রোটেকসন) এগ্রিমেন্ট অন প্রাইস অ্যাসিওরেন্স অ্যান্ড ফার্ম সারভিসেস বিল ২০২০ এবং এসেনশিয়াল কমোডিটিজ (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ২০২০।
কড়া শীত, প্রবল গরম, তুমুল বৃষ্টি উপেক্ষা করে দিল্লী-হরিয়ানা ও দিল্লী-ইউপি সীমান্তে অবস্থানরত কৃষকরা যতদিন প্রয়োজন বিক্ষোভ চালিয়ে যেতে প্রস্তুত। টিকায়েত বলেছেন প্রয়োজনে আরও দশ মাস থাকবেন তাঁরা। সংসদে কৃষি আইন পাশ হওয়া থেকে এই নিয়ে তিনবার ভারত বনধ হল।
টিকায়েত এও বলেন ভারত বনধের সাফল্য নির্ভর করছে সংবাদমাধ্যমের ওপর। যদি তারা যা ঘটছে তা ঠিকঠাক তুলে ধরে তাহলে ভারত বনধ সফল হবে নচেৎ নয়। কৃষক ইউনিয়নের নেতা বলেন, সরকার নিজের সুবিধামতো, পছন্দ মতো ব্যাখ্যা দেবে।
তিনি আরও বলেন, তিনি মনে করেন এই ভার্ত বনধে মানুষের দৈনন্দিন জীবনে কোন প্রভাব পড়বে না। মানুষ মূল্যবৃদ্ধি ও পেট্রল ডিজেলের দাম নিয়ে তিতিবিরক্ত।সেই নিয়েই তারা ব্যতিব্যস্ত। এই একদিনের বনধ তাদের প্রতিদিনের সমস্যার তুলনায় কিছু নয়।
কৃষকদের সমর্থনের ভান করে রাজনৈতিক দলগুলির নিজের আখের গোছানো প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলি এমনই করে থাকে।
কৃষক ও সংবাদমাধ্যমকে সম্বোধন করার সময় প্রধানমন্ত্রীর আমেরিকা সফর নিয়ে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, আমেরিকা সফরে গিয়ে সেখানে মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন তিনি অথচ কৃষকদের আবেদন সত্ত্বেও এতদিনে একবারও দেখা করেননি।
দুপুরে দিল্লী প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির প্রেসিডেন্ট অনিল চৌধুরী কৃষকদের আন্দোলনে সহমর্মিতা জানাতে গাজিপুর সীমান্তে বিক্ষোভস্থলে স্থলে যান। রাকেশ টিকায়েতের সঙ্গে তাঁর সামান্য কথাও হয় জলখাবার ফাঁকে ফাঁকে।
- with inputs from IANS
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন