অন্ধ্রপ্রদেশের সরকারি কর্মচারীদের ‘চলো বিজয়ওয়াদা’ কর্মসূচি ঘিরে বৃহস্পতিবার উত্তেজনা ছড়ালো। এর আগে কোভিড প্রটোকোলের কারণে সরকারের পক্ষ থেকে এই কর্মসূচি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিলো। যদিও সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এদিন দলে দলে কর্মচারী ‘পিআরসি সাধনা সমিতি’র ডাকে বিজয়ওয়াদায় উপস্থিত হন। মূলত উচ্চতর বেতন সংশোধনের দাবিতে এদিন দলে দলে সরকারি কর্মচারীরা চলো বিজয়ওয়াদা কর্মসূচীতে যোগ দেন।
পুলিশের পক্ষ থেকে এই বিক্ষোভ সমাবেশের অনুমতি দিতে অস্বীকার করে রাজ্য জুড়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। যদিও সমস্ত কর্মচারী সমিতির যৌথ অ্যাকশন কমিটি, 'পিআরসি সাধনা সমিতি'র আহ্বানের পরে বিপুল সংখ্যক কর্মচারী, শিক্ষক এবং পেনশনভোগীরা পুলিশি নিষেধাজ্ঞা অস্বীকার করে বিজয়ওয়াদা পৌঁছতে সক্ষম হন।
এদিন "উই ওয়ান্ট জাস্টিস" স্লোগান তুলে এবং নিজ নিজ ইউনিয়নের পতাকা ও ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভকারীরা এপি এনজিও ভবন থেকে বিআরটিএস রোডের দিকে একটি বিশাল মিছিল শুরু করে। দীর্ঘ মিছিলে ব্যস্ত এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের দাবি, ২৩ শতাংশ বেতন সংশোধন করে নতুন পে স্কেল চালু করতে হবে। সরকারকে গত মাসে জারি করা সরকারি আদেশ (জিও) ফিরিয়ে নিতে হবে। মূলত এই কয়েকটি দাবিতে এদিন বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠনের পক্ষ থেকে চলো বিজয়ওয়াদা কর্মসূচীর ডাক দেওয়া হয়। কর্মচারীরা সরকারের কাছে পে রিভিশন কমিশন (পিআরসি) রিপোর্ট প্রকাশের দাবি জানায়।
সমাবেশে অংশ নেওয়া এক কর্মচারী বলেন, "আমাদের দাবি ন্যায্য। আমরা আমাদের প্রাপ্য অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।"
ওয়াইএসআর কংগ্রেস পার্টি (YSRCP) সরকারের 'অটল' মনোভাবের সমালোচনা করে, অন্য একজন কর্মচারী বলেছেন: "আমরা আপনার নতুন পিআরসি চাই না। আমাদের পুরানো বেতন স্কেল অনুসারে বেতন দিন।"
সরকার তাদের সব দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন কর্মচারী সংগঠনের নেতারা। বান্দি শ্রীনিবাস রাও নামের এক কর্মচারি নেতা বলেন, "সরকার বাস ও ট্রেন বন্ধ করে দিয়েও আমাদের আটকাতে পারেনি।" নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার দাবি না মেটালে কর্মচারীরা আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে লাগাতার ধর্মঘট শুরু করবে। যার ফলে পুরো প্রশাসন অচল হয়ে যাবে এবং জনগণের অসুবিধার জন্য সরকার দায়ী থাকবে।
পুলিশ কোভিড পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ‘চলো বিজয়ওয়াদা' প্রতিবাদ কর্মসূচির অনুমতি দিতে অস্বীকার করে এবং গতকাল থেকেই বিভিন্ন জেলায় সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষকদের ইউনিয়নের নেতাদের আটক করে।
নেতাদের হয় গৃহবন্দী করা হয় অথবা নোটিশ দেওয়ার জন্য থানায় তলব করা হয়। যে নোটিশে বিক্ষোভের জন্য বিজয়ওয়াড়া না যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো। বিক্ষোভে অংশ নিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।
বিজয়ওয়াড়ার পুলিশ কমিশনার কান্তি রানা টাটা জানান, বিক্ষোভের জন্য কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। কারণ, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের জারি করা নির্দেশিকা অনুসারে ২০০ জনের বেশি জমায়েতের কোনও অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয় এবং সরকারি কর্মচারিদের এই কর্মসূচিতে ৫ হাজারের বেশি কর্মচারীর অংশগ্রহণ করার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন