গত শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) নিজের ৭২ তম জন্মদিনে নামিবিয়া থেকে নিয়ে আসা ৮টি চিতা মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় অরণ্যে ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জাতীয় সংবাদমাধ্যমে এই নিয়েই চলছে আলোচনা। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, চিতাদের প্রত্যাবর্তন এই অঞ্চলের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। যদিও স্থানীয় বাসিন্দারা প্রধানমন্ত্রীর এই কাজে আদৌ উল্লাসিত নন। তাঁদের বক্তব্য, চিতা এলেও তাঁদের দারিদ্র্য এবং অপুষ্টির সাথে লড়াই করেই দিন কাটাতে হবে।
কুনো জাতীয় অরণ্যের আশেপাশের অতন্ত ২৩ টি গ্রাম রয়েছে। এই গ্রামগুলোর মোট জনসংখ্যা প্রায় ৫৬ হাজার। গ্রামের সব বাসিন্দারাই অত্যন্ত দরিদ্র। কর্ম সংস্থানের তীব্র অভাব রয়েছে এখানে। অপুষ্টি এবং দারিদ্র্যতা তাঁদের নিত্য সঙ্গী।
কুনো জাতীয় অরণ্যের কাছেই অবস্থিত শেওপুর জেলা। সম্প্রতি বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশ সরকার বিধানসভায় স্বীকার করেছে, শেওপুর জেলায় ২১ হাজারেরও বেশি শিশু (৫ বছরের নীচে) অপুষ্টিতে ভুগছে। দু সপ্তাহ আগেই এই জেলায় অপুষ্টির কারণে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। যদিও অফিসিয়ালি অপুষ্টি নির্মূল করতে কোনও চেষ্টায় খামতি রাখছেন না সরকারী আধিকারিকরা। শিশুদের বয়স ৫ বছর হওয়ার সাথে সাথে ক্ষুধার্ত শিশুদের তালিকা থেকে তাদের নাম সরিয়ে দেন আধিকারিকরা।
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, তাদের গ্রামে কর্ম সংস্থানের কোনও সুযোগ নেই। সর্বদাই চরম দারিদ্র্যের সাথে বসবাস করতে হয় তাঁদের। তাঁদের শিশুরা ঠিকমতো খেতে পায় না, অপুষ্টিতে ভুগছে।
চিতাগুলোকে ছাড়ায় তাদের কোনও উপকার হবে কিনা জিজ্ঞেস করা হলে তাঁরা বলেন, "এতে আমাদের কোনও লাভ নেই। আমাদের পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হবে না।"
প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন চিতাগুলো ছাড়ার ফলে এই এলাকার আমূল উন্নতি হবে। চিতার সংখ্যা বাড়লে বিশাল সংখ্যক পর্যটক এই এলাকাতে আসবে ফলে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে। কিন্তু বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে, এইভাবে সামাজিক পরিবর্তন আনতে কমপক্ষে ২০-২৫ বছর সময় লাগবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন