বিরোধীদের সুরে সুর মিলিয়ে এবার সিবিআইয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন দেশের প্রধান বিচারপতি এন ভি রমনা। তাঁর কথায়, সিবিআই কখনও অতিসক্রিয় হয়ে যায় আবার কখনও একেবারে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। এর ফলে দেশবাসীর মনে সিবিআইয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে গভীর সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, সিবিআই-ইডির মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করছে কেন্দ্র সরকার। বিজেপি-বিরোধী দলের কোনো নেতার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত শুরু করলে, সেই নেতা যদি বিজেপিতে যোগ দিয়ে দেন তাহলে সিবিআই হাত গুটিয়ে বসে যায়। এবার এই একই সুর শোনা গেল দেশের প্রধান বিচারপতির গলায়।
শুক্রবার নয়াদিল্লির বিজ্ঞান ভবনে সিবিআই আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে এন ভি রমনা বলেন, " সিবিআইয়ের ওপর প্রথমদিকে জনতার গভীর আস্থা ছিল। সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার জন্য বিচারবিভাগের কাছে একের পর এক আবেদন জমা পড়তো। কারণ এই তদন্ত সংস্থা নিরপেক্ষ এবং স্বাধীন তদন্তের প্রতীক ছিল। রাজ্য পুলিশের দক্ষতা এবং নিরপেক্ষতার উপর সন্দেহ থাকলে সিবিআই তদন্ত চাইতেন জনগণ। কিন্তু এখন সিবিআইয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে গভীর সন্দেহ তৈরি হয়েছে দেশবাসীর মধ্যে।'
সরাসরি নরেন্দ্র মোদির সরকারের নাম উল্লেখ না করে প্রধান বিচারপতি বলেন, "ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিকদলগুলি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যাবে। কিন্তু আপনাদের প্রতিষ্ঠান পাকাপাকিভাবে থাকবে। কোনো কিছুর সাথে আপোষ করবেন না। স্বাধীনভাবে থাকুন। নিয়ম মেনে চলুন।"
সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে হলে সংস্থার শীর্ষ কর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে মনে করছেন রমনা। পাশাপাশি বিভিন্ন তদন্ত সংস্থাকে এক ছাতার তলায় এনে একটি স্বাধীন অভিন্ন প্রতিষ্ঠান গঠনেও জোর দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন - একটি অভিন্ন নিয়ন্ত্রক তদন্ত প্রতিষ্ঠান গড়া দরকার। ওই প্রতিষ্ঠান স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে, এই মর্মে আইন পাস হওয়া প্রয়োজন। যেভাবে সিবিআইয়ের ডিরেক্টর নিয়োগ করা হয়, এখানেও নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্তাদের নিয়োগ করা হবে। তাহলে একই ঘটনায় একাধিক সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করানো প্রয়োজন পড়বে না। অভিন্ন নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানই ঠিক করে দিতে পারবে কোন অভিযোগে কোন তদন্ত সংস্থা কাজ নামবে।
পুলিশের নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, "পুলিশ বাহিনীকে নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে কাজ করতে হবে। অপরাধ প্রতিরোধে প্রধান গুরুত্ব দেওয়া উচিত। গণতান্ত্রিক কাঠামো মেনে কাজ করতে হবে।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন