তড়িঘড়ি ও নির্বিচারে গ্রেফতার, জামিন পেতে অসুবিধা এবং বিচারাধীন অবস্থায় দীর্ঘ সময় জেলবন্দী থাকা - এই সমস্ত কিছু নিয়ে এবার সরব হলেন দেশের প্রধান বিচারপতি এন ভি রমনা। বিজেপি সরকারের আমলে দেশে ঘটা ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতির এই মন্তব্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
গত মাসে কয়েক বছরের পুরনো একটি বিতর্কিত টুইট মামলায় দিল্লি এবং উত্তর প্রদেশ পুলিশ ফ্যাক্ট চেকিং ওয়েবসাইট অল্ট নিউজের সহ প্রতিষ্ঠাতা মহম্মদ জুবেইরকে গ্রেফতার করে। এখনও জেলেই রয়েছেন তিনি। এই ঘটনায় দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
শনিবার রাজস্থানের জয়পুরে একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার সময় কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রী কিরণ রিজিজু এবং অন্যান্য সিনিয়র বিচারকদের উপস্থিতিতে কোনও নির্দিষ্ট মামলার নাম না নিয়ে প্রধান বিচারপতি এই মুহূর্তে ভারতীয় ফৌজদারি বিচার প্রক্রিয়াকে 'শাস্তি' হিসেবে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, "আমাদের সামনে বিশাল চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আমাদের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায়, প্রক্রিয়াটি শাস্তি স্বরূপ। তড়িঘড়ি ও নির্বিচারে গ্রেফতার থেকে শুরু করে জামিন পেতে অসুবিধা, বিচারাধীন ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় জেলবন্দী করে রাখা - এই সমস্তকিছুর দিকে জরুরিভিত্তিতে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।"
তিনি বলেন, "ফৌজদারি বিচার প্রশাসনের দক্ষতা বাড়াতে আমাদের একটি সামগ্রিক কর্মপরিকল্পনা দরকার। পুলিশের প্রশিক্ষণ ও সংবেদনশীলতা এবং কারা ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ হলো ফৌজদারি বিচার প্রশাসনের উন্নতির একটি দিক। NALSA (National Legal Services Authority) এবং আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষগুলিকে উপরের বিষয়গুলিতে ফোকাস করতে হবে।"
রাজনৈতিক বিরোধিতাকে শত্রুতায় পরিণত করা এবং আইন প্রণয়নের গুণমান নিয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। তিনি বলেন, "রাজনৈতিক বিরোধিতাকে শত্রুতায় রূপান্তরিত করা উচিত নয়, দুঃখজনকভাবে যা আমরা আজকাল প্রায়ই প্রত্যক্ষ করছি। এগুলো সুস্থ গণতন্ত্রের লক্ষণ নয়। আগে সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ছিল। দুর্ভাগ্যবশত, বর্তমানে বিরোধীদের জায়গা কমে যাচ্ছে। দেশে আইন প্রণয়নের মানেরও পতন ঘটছে।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন