কানহাইয়া কুমারের কংগ্রেসে যোগদান নিয়ে রাজনৈতিক মহল তোলপাড়। আদতে কম্যুনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (সিপিআই) এবং তার ছাত্র সংগঠন অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্টস ফেডারেশনের (এআইএসএফ) সঙ্গে জড়িত ছিলেন আগে। জেএনইউ স্টুডেন্টস ইউনিয়নের প্রেসিডেন্টও ছিলেন।
মনে করা হচ্ছে কথাবার্তায় তুখোড়, দক্ষ তার্কিক কানহাইয়াকে কংগ্রেসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা দেওয়া হতে পারে। এমনও শোনা যাচ্ছে তাকে গুজরাতের হার্দিক প্যাটেলের মতো বিহার প্রদেশ কংগ্রেসের ওয়ার্কিং প্রেসিডেন্ট অথবা দলের সম্পাদক করা হতে পারে।
আদর্শবাদী বলে পরিচিত কানহাইয়া সংবাদসংস্থা আইএএনএস-কে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় দলবদলে আদর্শের সঙ্গে রফা করা হল কিনা এই প্রশ্নে বিচলিত হননি। তিনি বলেন, 'আদর্শের পরিবর্তন ঘটে। আদর্শ কথাটা শুনলেই আমাদের মনে একটি নির্দিষ্ট ধারণা গড়ে ওঠে। জগৎ পরিবর্তনশীল কিন্তু ভিত একই থাকে।'
কানহাইয়া জানান, তাঁর কাছে তাঁর ভাবনা বা আদর্শের ভিত্তি ভারতের সকলের মঙ্গল এবং 'বসুধৈব কুটুম্বকম' এই সংস্কৃতির বোধের উপর গড়ে উঠেছে।
এরপর বিজেপিকে নিশানা করে তিনি বলেন, দেশের বর্তমান শাসকরা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে পছন্দ করে না। সমালোচকদের সমস্ত প্রশ্ন নাকচ করে দিতে চায়। যার ফলে দেশের ভিত নষ্ট হতে থাকে।
একই সঙ্গে তিনি দেশের সংস্কৃতি ও সভ্যতাকে বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কংগ্রেসের ঐতিহাসিক উত্তরাধিকারের প্রশংসা করেন। এই জন্যই তিনি ওই দলের সঙ্গে গেছেন বলে কানহাইয়া জানান।
যদিও এখন অন্তঃকলহে দীর্ণ কংগ্রেসও। যেদিন কানহাইয়া কুমার কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন সেইদিনই পঞ্জাব কংগ্রেস সভাপতি নভজোত সিং সিধু টুইট করে ইস্তফা দেন।
এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে বলা হলে কানহাইয়া বলেন, জ্বলন্ত জাতীয় বিষয় থেকে নজর ঘোরাতে এবং বিরোধীদের অপদার্থ হিসেবে তুলে ধরতে বিজেপি চক্রান্ত করে এই সব বিষয় সামনে নিয়ে আসে।
তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি, বেকার সমস্যা, কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের বিক্ষোভের মতো বিষয় নিয়েই আলোচনা হওয়া উচিত। তাঁর দাবি, বিজেপিও অন্তর্কলহ থেকে মুক্ত নয়।
তাঁর প্রশ্ন, অমিত শাহ এবং যোগী আদিত্যনাথের মধ্যে সবকিছু কি স্বাভাবিক? কেন নীতিন গডকরিকে কখনও দেখা যায় না প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে?
কানহাইয়া এও বলেছেন, বিরোধীদের যে বিষয়গুলি তোলা উচিত বিশেষ করে সাধারণ মানুষের সমস্যা সেগুলি কংগ্রেসই তুলে ধরেছে। সেইজন্যই তিনি ওই দলের সঙ্গ নিয়েছেন। কৃষক, যুব সম্প্রদায়, বেকার, দরিদ্র, মহিলা - এই বিষয়গুলিও তিনি তুলে ধরতে চান বলে জানিয়েছেন কানহাইয়া।
২০১৯এর লোকসভা নির্বাচনে বিহারের বেগুসরাইতে তিনি বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হন। যদিও ওই অঞ্চলে সিপিআইয়ের যথেষ্ট প্রভাব আছে। নির্বাচনে দাঁড়ানোর ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে কানহাইয়া বলেন, প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রে নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু একমাত্র বিষয় নয়।
তিনি বলেন, নির্বাচনে লড়া তাঁর অগ্রাধিকার নয়। তিনি চান জনস্বার্থ জড়িয়ে আছে এমন বিষয়গুলি তুলতে। সাধারণ মানুষের জন্য লড়াই করা প্রয়োজন।
- with inputs from IANS
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন