করোনা মহামারীর কারণে গতবছর দেশজুড়ে চলা লকডাউনের সময় প্রতি ১০ জন মহিলার মধ্যে ৯ জন মহিলা কম খাবার খেতে বাধ্য হয়েছেন, যা তাঁদের পুষ্টিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। সম্প্রতি এক সমীক্ষায় এই তথ্য উঠে এসেছে।
টাটা-কর্নেল ইন্সটিটিউট ফর এগ্রিকালচার অ্যান্ড নিউট্রিশনের গবেষকরা গোটা দেশে এই সমীক্ষা চালিয়েছেন। খাদ্যের পিছনে ব্যয়, খাদ্যতালিকার বৈচিত্র্য এবং অন্যান্য নিউট্রিশন ইন্ডিকেটরের তথ্য সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণ করেছেন গবেষকরা। বিহার, উড়িষা এবং উত্তরপ্রদেশের প্রতিটি জেলায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল তথ্য সংগ্রহের সময়।
সমীক্ষায় অংশ নেওয়া প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জন মহিলা জানিয়েছেন তাঁরা কম খাবার খেতে বাধ্য হয়েছেন, শতাংশের হিসেবে যা ৯০ শতাংশ। ৯৫ শতাংশ জানিয়েছেন তাঁরা গুটিকয়েক ধরণের খাবার গ্রহণ করেছেন। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ, মাংস, ডিম, শাকসবজি এবং ফলের মতো পুষ্টিকর খাবার, যা সুস্বাস্থ্য ও বিকাশের জন্য জরুরি, সেই খাবার না খাওয়ার কারণে ওই মহিলাদের পুষ্টিতে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।
ইকোনোমিয়া পলিটিকা জার্নালে সম্প্রতি এই গবেষণার তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। ২০১৯ সালের মে মাসে প্রতি গৃহে খাদ্য পিছু ব্যয় এবং মহিলাদের খাদ্যতালিকার সাথে ২০২০ সালের মে মাসের খাদ্যতালিকা ও ব্যয়ের কত তফাৎ, প্রতিবেদনে সেইদিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে।
টিসিআই-এর এক রিসার্চ ইকোনমিস্ট সৌম্যা গুপ্তা জানিয়েছেন, "মহামারীর আগেও মহিলাদের খাদ্যতালিকায় বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবারের অভাব ছিল। কিন্তু কোভিড সেই পরিস্থিতি আরও বাড়িয়ে তুলেছে।"
সমীক্ষায় আরো বলা হয়েছে, লকডাউনের সময় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায়, নারীর পাশাপাশি শিশুরাও অপুষ্টির শিকার হয়েছিল। ৭২ শতাংশ পরিবারে এর প্রভাব পড়েছিল। অধিকাংশ পরিবারেই ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের মা ও গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের রেশন ও রান্না করা খাবারই পুষ্টির প্রধান উৎস।
সৌম্যা গুপ্তার কথায়, এই সময় যে মায়েরা অপুষ্টির শিকার হয়েছেন, তার প্রভাব কেবল মহিলার প্রোডাক্টিভিটি বা তাঁর সুস্বাস্থ্যের ওপরেই পড়বে না, তাঁর সন্তানের ওপরেও পড়বে।
- with inputs from IANS
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন