বছরের এই সময় খোলা হয় কেদারনাথ মন্দিরের দরজা। খোলা থাকে শীত আসার আগে পর্যন্ত। এই সময়ে অনেক দর্শনার্থী আসেন কেদারনাথ মন্দিরে। সম্প্রতি, কুড়ি কিলোমিটার ট্রেক করে কেদারনাথ মন্দিরে গিয়ে শিব-মূর্তির পা স্পর্শ করে প্রণাম করল নবাব। নবাব হল একটি হাস্কি শ্রেণির সারমেয়। বিকাশ ত্যাগী নামের নয়ডার বাসিন্দার পোষ্য সে। বিগত চার বছর ধরে বিকাশের যাত্রাসঙ্গী এই নবাব। বিকাশ একজন ব্লগার, ইউটিউবার। নবাবকে নিয়ে ভারতের অনেক মন্দির, তীর্থস্থানে ঘুরেছেন তিনি। এবার কেদারনাথ মন্দিরে গিয়ে নবাবের সাথে মন্দির চত্বরে ভিডিও বানানোর পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় তা ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। উঠেছে আলোচনার ঢেউ।
এই ভাইরাল ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখার পর ইউটিউবারের বিরুদ্ধে আইনি-ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন বদ্রীনাথ-কেদারনাথ কমিটির প্রেসিডেন্ট অজেন্দ্র অজয়। তাঁর নির্দেশে মন্দির কমিটির তরফ থেকে FIR দায়ের করা হয়েছে বিকাশ ত্যাগীর বিরুদ্ধে। উত্তরাখণ্ড প্রশাসনের কাছে চিঠিও লিখেছেন তিনি। মন্দিরের তরফে সাফ জানানো হয়েছে মন্দির চত্বরে এই ধরনের ঘটনা কিছুতেই মেনে নেওয়া হবে না। এই ঘটনা মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানতে পারে বলে মনে করছে মন্দির কর্তৃপক্ষ।
ভাইরাল ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, বিকাশ তাঁর কুকুরের সামনের পা ধরে কেদারনাথ মন্দিরের বাইরের চত্বরে থাকা 'নন্দী' মূর্তিটির পা স্পর্শ করাচ্ছে। মন্দিরের পুরোহিতকেও নবাবের মাথায় তিলক লাগাতে দেখা গেছে।
এই ঘটনা নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই মুখ খুলেছেন নবাবের মনিব বিকাশ ত্যাগী। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, মানুষের মতো কুকুরও ভগবানের সৃষ্টি। মানুষের মন্দিরে পদার্পণ নিয়ে কোন সমস্যা না থাকলে, কুকুরের প্রবেশ নিয়ে এত আলোচনা কেন! আজকাল কুকুরকে নিয়ে লোকজন সুইমিংপুল, রেস্তোরাঁ সব জায়গায় যায়, তাহলে এখানে এই নাটক কেন?
এই ঘটনায় নেটিজেনদের একাংশও বিকাশের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাঁরা ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মন্দির কর্তৃপক্ষের ওপর। তাঁদের প্রশ্ন কুকুরও একটি প্রাণী, এই ছবিকে ঘিরে এত কেন ক্ষুব্ধ মন্দিরের পুরোহিতরা? একজন পুরোহিত তো নিজেই নবাবের মাথায় সিঁদুরের টিকা পরিয়ে দিচ্ছেন।
একজন কমেন্টে মহাভারতের প্রসঙ্গ টেনে লিখেছেন, একটি কুকুর যুধিষ্ঠিরের সাথে তপোবনে গিয়েছিল। নবাবেরও মন্দিরে যাবার পূর্ণ অধিকার আছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন