কোভিডবিধি মেনে অনেক রাজ্যেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে কিন্তু রাজ্যে এখনও বন্ধ। এই দেড় বছর ধরে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকার ফলে অক্ষরই ভুলে যেতে বসেছে পড়ুয়ারা। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে। লকডাউনের জেরে পড়ুয়াদের একটা বড় অংশ, বিশেষ করে প্রান্তিক অঞ্চলে ছাত্র-ছাত্রীরা একটা-দু'টোর বেশি অক্ষর চিনতে পারছে না। মহামারীর আগে তারা যা শিখেছিল, চর্চার অভাবে ভুলে যেতে বসেছে।
স্কুল খোলা উচিত না অনুচিত, তা নিয়ে তর্ক চললেও প্রান্তিক এলাকায় ৯৭ শতাংশ পরিবার চায়, স্কুল খুলে দেওয়া হোক। তবে পড়ুয়াদের যে ক্ষতি হয়েছে, তা এত সহজে পূরণ হবে না বলে তাঁরা আশঙ্কা করছেন। আগস্ট মাসের দিল্লি, হরিয়ানা, পঞ্জাব, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সমীক্ষা চালায়।
অর্থনীতিবিদ জ্য দ্রজে, ঋত্বিকা খেরা, বিপুল পাইকারা, নিরালি বাখলার মতো অর্থনীতিবিদরা এই রিপোর্ট তৈরি করেন। পিছিয়ে পড়া পরিবারের পড়ুয়াদের অফলাইন ও অনলাইন শিক্ষা নিয়ে এই সমীক্ষা চালানো হয়। লকড আউট: ইমারজেন্সি রিপোর্ট অফ স্কুল এডুকেশন নামে ওই সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, ৩৭ শতাংশ পড়ুয়ার পড়াশোনার কোনও অগ্রগতি হয়নি। ৪৮ শতাংশ অক্ষর চিনতে পারছে না। শহরে পড়াশোনা করতে পারেনি ১৯ শতাংশ পড়ুয়া।
সমীক্ষায় একটা বইয়ের কিছুটা অংশ পড়তে দেওয়া হয়েছিল পড়ুয়াদের। অর্ধেকের বেশি পড়ুয়া মাত্র কয়েকটি শব্দ চিনতে পেরেছে। এই পরিস্থিতি যথেষ্ট আশঙ্কাজনক বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। শহর এলাকায় নিয়মিত পড়াশোনা করেছে ৪৭ শতাংশ, একটি শব্দের বেশি পড়তে পারছে না ৪২ শতাংশ। একটুও পড়াশোনার সুযোগ হয়নি ১৯ শতাংশের। গ্রামীণ এলাকায় ২৮ শতাংশ শিশু নিয়মিত পড়াশোনা করেছে। বাকি অধিকাংশেরই অনলাইন ক্লাসের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস, বইপত্র পাঠানো হয়নি বলে অভিযোগ।
অনেককেই অনলাইনে ক্লাস করতে গিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। আর্থিক অনটন, স্মার্টফোন না থাকা, আর থাকলেও ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকার দরুন পড়াশোনা ব্যাহত হয়েছে। গ্রামীণ এলাকায় অধিকাংশেরই ভালো স্মার্টফোন নেই। আদিবাসী ও দলিত পড়ুয়াদের অবস্থা আরও শোচনীয়। পড়ুয়াদের পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট হয়েছে লকডাউনে। অনলাইনে পড়াশোনারও বিরুদ্ধে মত পোষণ করেছে তাঁরা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন