ইলেক্টোরাল বন্ড স্কীম প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের কড়া নির্দেশের আগেই কেন্দ্রীয় সরকার ১ কোটি টাকা মূল্যের ৮,৩৫০টি ইলেক্টোরাল বন্ড ছাপিয়ে ছিল। গত বছরের ২৭ ডিসেম্বরের পর থেকে চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারির আগে পর্যন্ত এই বন্ড ছাপানো হয়েছে। সম্প্রতি অবসরপ্রাপ্ত নৌসেনা আধিকারিক লোকেশ বাত্রা-র করা আরটিআই-এর উত্তরে এই তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। এক এক্স বার্তায় (পূর্বতন ট্যুইটার) একথা জানিয়েছেন লোকেশ বাত্রা।
চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট ইলেক্টোরাল বন্ড স্কীমকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে অভিহিত করে এবং এই স্কীম বাতিলের নির্দেশ দেয়। লোকেশ বাত্রা-র করা আরটিআই-এর উত্তর থেকে জানা যাচ্ছে ২০১৮তে ইলেক্টোরাল বন্ড স্কীমের শুরু থেকে কেন্দ্রীয় সরকার মোট ৬.৮২ লক্ষ ইলেক্টোরাল বন্ড ছাপিয়েছে। যার মধ্যে ১ কোটি টাকা মূল্যের ইলেক্টোরাল বন্ড ছাপানো হয়েছে মোট ৩৩ হাজার। ২৭ ডিসেম্বরের পরবর্তী সময় থেকে শীর্ষ আদালতের রায়ের আগে পর্যন্ত ১কোটি টাকা মূল্যের ইলেক্টোরাল বন্ড ছাপানো হয়েছে ৮,৩৫০।
আরটিআই-এর উত্তর থেকে জানা গেছে এখনও পর্যন্ত ২.৬৫ লক্ষ ১ হাজার টাকার ইলেক্টোরাল বন্ড ছাপানো হয়েছিল। যার মধ্যে বিক্রি হয়েছে ১৫৯টি। ১০ হাজার টাকা মূল্যের ইলেক্টোরাল বন্ড ছাপানো হয়েছিল ২.৬৫ লাখ। যার মধ্যে বিক্রি হয়েছে ২৬৪টি। ১ লক্ষ টাকা মূল্যের ইলেক্টোরাল বন্ড ছাপানো হয়েছিল ৯৩ হাজার। বিক্রি হয়েছে ৩,৪৫৩টি। ১০ লক্ষ টাকা মূল্যের বন্ড ছাপানো হয়েছিল ২৬,৬০০ এবং বিক্রি হয়েছে ৮,৫২৩টি। ৩৩ হাজার ১ কোটি টাকা মূল্যের ছাপানো ইলেক্টোরাল বন্ডের মধ্যে বিক্রি হয়েছে ১৫,৬৩১টি।
লোকেশ বাত্রা-র করা আরটিআই-এর উত্তর থেকে জানা গেছে ইলেক্টোরাল বন্ড ছাপানোর জন্য এখনও পর্যন্ত সরকারের খরচ হয়েছে ১,৯০,০১,৩৮০ টাকা। যদিও এই খরচের সঙ্গে শেষবার ছাপানো ৮,৩৫০টি ১ কোটি টাকা মূল্যের ইলেক্টোরাল বন্ড ছাপানোর খরচ যোগ করা হয়নি।
২০১৮ সালের ২ জানুয়ারি গেজেট নোটিফিকেশন ২০-র মাধ্যমে ভারত সরকার ইলেক্টোরাল বন্ড চালু করে। ২০১৭ সালে ফিনান্স আইনে সংশোধনী এনে ইলেক্টোরাল বন্ডের প্রস্তাব রাখা হয়। ২০১৭-র বাজেট বক্তৃতায় প্রথম এর উল্লেখ করেন তদানীন্তন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।
এডিআর-এর তথ্য অনুসারে ২০১৭-১৮ থেকে ২০২২-২৩ পর্যন্ত ইলেক্টোরাল বন্ড স্কীমের মাধ্যমে বিজেপি অনুদান পেয়েছে ৬,৫৬৬.১২ কোটি টাকা। যা বন্ড থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অনুদানের ৫৪.৭৭ শতাংশ। তালিকায় দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে আছে কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেস। এই দুই দলের প্রাপ্ত অনুদান যথাক্রমে ১,১২৩ কোটি এবং ১,০৯২ কোটি বা ৯.৩৭ শতাংশ এবং ৯.১১ শতাংশ। সিপিআইএম দল ইলেক্টোরাল বন্ডের শুরু থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছে এবং আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। তথ্য অনুসারে, ইলেক্টোরাল বন্ড স্কীম থেকে ১ টাকাও অনুদান নেয়নি সিপিআইএম।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন