৮০ বছরের যাত্রা শেষ হল। প্রয়াত রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিআইএম নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। গোটা জীবন জুড়ে দেখেছেন বামেদের উত্থান পতন। রাজ্যে ১০ বছর মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বুদ্ধবাবু।
১৯৪৪ সালে উত্তর কলকাতায় জন্ম হয় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর। সেখানেই ধীরে ধীরে বড় হওয়া। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলো ভালোবাসতেন তিনি। ১৯৬৬ সালে তিনি সিপিআইএম-র সদস্য হন। ১৯৬৮ সালে ডিওয়াইএফআই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদক নির্বাচিত হন। লড়াই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ক্রমশ রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায় বুদ্ধবাবুকে।
১৯৭১ সালে সিপিআইএম রাজ্য কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৭ সালে কাশীপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। ওই নির্বাচনে জয়ী হয়ে রাজ্যের তথ্য ও জনসংযোগ দপ্তরের মন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৮৫ সালে সিপিআইএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন। ১৯৮৭ সালে যাদবপুর কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মন্ত্রী হয়েছিলেন।
১৯৯৯ সালে রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছিলেন। ২০০১ সালে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন বুদ্ধবাবু। তারপর থেকেই একাধিক বিতর্কে জড়ায় তাঁর সরকার। নন্দীগ্রাম থেকে সিঙ্গুর আন্দোলন সবই তাঁর আমলেই। তিনিই রাজ্যের শিক্ষিত বেকার যুবকদের জন্য ডাক দিয়েছিলেন 'কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যত'। স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন সিঙ্গুরে টাটা কারখানার। কিন্তু তৎকালীন বিরোধী দলের লাগাতার আন্দোলনের ফলে সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
শুধুমাত্র তাঁর দলই নয়, বিরোধী রাজনৈতিক দলের তরফ থেকেও তাঁকে তকমা দেওয়া হয় 'সৎ' নেতা। ২০১১ সালে ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর থেকে বুদ্ধবাবু কিছুটা হলেও ভেঙে পড়েন। তারপর থেকে বার বার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন শারীরিক অসুস্থতার কারণে। প্রতিবারই তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। ২০২২ সালে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তাঁকে পদ্মভূষণ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করেন। বৃহস্পতিবার নিজের পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন