দেশে মহামারীর মধ্যেও চলেছে উচ্ছেদ অভিযান। ২৪৫ টি উচ্ছেদ অভিযানে ঘরহারা হয়েছে ৬১ হাজারেরও বেশি পরিবার। তাদের বেশিরভাগেরই মেলেনি মাথা গোঁজার ঠাঁই বা আশ্রয় বা সামান্য ক্ষতিপূরণ। সম্প্রতি হাউসিং এন্ড ল্যান্ড রাইট নেটওয়ার্ক ভারতে জোর করে উচ্ছেদ সমীক্ষা-রিপোর্টে এমনই তথ্য প্রকাশ করেছে।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, 'মানবাধিকার এবং নাগরিকের বেঁচে থাকার যে অধিকার সংবিধানে রয়েছে, তা সম্পূর্ণভাবে লংঘন করা হয়েছে। উচ্ছেদ হওয়া পরিবারের মধ্যে মাত্র ৯ শতাংশ পরিবারের সামান্য পুনর্বাসন মিলেছে। ২ শতাংশের মিলেছে আংশিক পুনর্বাসন। মাত্র দেড় শতাংশ পরিবারের মিলেছে সামান্য ক্ষতিপূরণ। বাকিরা খোলা আকাশের নীচে দিন কাটাচ্ছেন।'
সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে চলতি বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত দেশের মোট উচ্ছেদ অভিযান হয়েছে ২৪৫ টি। ঘর ছাড়া হয়েছে ৬১ হাজার ২৫৭টি পরিবার। উচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে ১১৯ টি। ঘরছাড়া হয়েছে ১২ হাজার পরিবার। এই সময়কালে দেশের সর্বত্রই কমবেশি লকডাউন চলায় পুলিশের হাতে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে সেই মানুষগুলোকে।
উচ্ছেদ অভিযান হয়েছে ফরিদাবাদ পুরসভার খড়িগাঁওতে। ১২ হাজার ঘর ভেঙে দেওয়া হয়। দিল্লি উন্নয়ন পর্ষদ রমেশ পার্কে ৩০০টি ঘর ভেঙে উচ্ছেদ করে। যদিও সরকার পক্ষের দাবি, উচ্ছেদের কারণ নগরোন্নয়ন ও নগরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা। পরিবেশ দূষণ ও বন সংরক্ষণের নামে চলছে উচ্ছেদ অভিযান। ১২ হাজার পরিবারের সকলেই নিম্ন আয়ের অন্তর্ভুক্ত। একদিকে লকডাউনে সবাইকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছে কেন্দ্র, অন্যদিকে কিছু অসহায় পরিবারকে ঘর ছাড়া করে দেওয়ার অভিযান চালাচ্ছে।
সরকারি সূত্র উল্লেখ করে সমীক্ষা-রিপোর্ট বলছে, ২০২০ সালে ৪৯ শতাংশ উচ্ছেদ অভিযান চলছে পরিবেশ প্রকল্প চালু করার নামে। ২৫ শতাংশ উচ্ছেদ অভিযান হয়েছে পরিকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের নামে। বস্তি মুক্ত পরিবেশ প্রকল্পের নামে হাজার ১৯ শতাংশ উচ্ছেদ অভিযান হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, উচ্ছেদের আগে নোটিশ দিতে হবে, সমীক্ষা চালাতে হবে এবং সেই পরিবারের পুনর্বাসনে ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু অভিযোগ, এর কোনও নির্দেশ পালন করা হয়নি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন