জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বহু বার সতর্ক করেছেন গবেষক-বিজ্ঞানীরা। তবুও টনক নড়েনি। এই আবহে ফের উদ্বেগের খবর শোনাল ইসরো। ইসরোর প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে হিমবাহ থেকে সৃষ্ট হ্রদের ব্যাপ্তি ঘটেছে ৮৭ শতাংশ। গত কয়েক বছরে কিছু হ্রদের পরিমাপ দ্বিগুণ হয়েছে আবার কিছু বেড়েছে দেড় গুণ। রিপোর্ট অনুযায়ী, সবমিলিয়ে ৬৭৬টি হ্রদের আয়তন বেড়ে গিয়েছে।
ওই ৬৭৬ টি হ্রদের মধ্যে ১৩০ টি হ্রদ ভারতে অবস্থিত বলেই জানিয়েছে ইসরো। এর মধ্যে ৬৫টি হ্রদ সিন্ধু নদ অববাহিকা অঞ্চলে অবস্থিত, সাতটি গাঙ্গেয় অববাহিকা অঞ্চলে এবং ৫৮টি ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা অঞ্চলের মধ্যে পড়ে।
হ্রদগুলির ভৌগলিক অবস্থান নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইসরো। তাঁদের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিপজ্জনক ভাবে আয়তন বেড়েছে এমন ৩১৪টি হ্রদ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪০০০-৫০০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। ২৯৬টি হ্রদ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫০০০ মিটারের বেশি উচ্চতায় অবস্থিত। যেমন, হিমাচল প্রদেশের ঘেপাং ঘাট হিমবাহ হ্রদ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪০৬৮ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। ১৯৮৯ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এই হ্রদের বিস্তার বেড়েছে ১৭৮ শতাংশ। আগে ৩৬ হেক্টর জায়গা জুড়ে অবস্থান ছিল হ্রদটির, বর্তমানে ১০১ হেক্টর জায়গা জুড়ে বিরাজ করছে।
জানা গেছে, গত কয়েক দশক ধরে মহাকাশ থেকে কৃত্রিম উপগ্রহ যে সমস্ত ছবি তুলেছে এবং তথ্য সংগ্রহ করেছে, তার ভিত্তিতেই হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের বিপজ্জনক পরিস্থিতি নিয়ে এই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ইসরো।
হিমবাহ হ্রদগুলিকে মোট চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে। মোরেন-ড্যামড লেক বা গ্রাবরেখা থেকে সৃষ্ট হ্রদ, আইস ড্যামড লেক বা বরফ জমে তৈরি হ্রদ, ভূমিক্ষয়ের ফলে সৃষ্ট হ্রদ এং হিমবাহ হ্রদও রয়েছে হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে।
বিপজ্জনক ভাবে আয়তন বৃদ্ধি পাওয়া যে ৬৭৬টি হ্রদের, মধ্যে ৩০৭টি মোরেন হ্রদ, ২৬৫টি ভূমিক্ষয়ের ফলে সৃষ্ট হ্রদ, আটটি বরফ গলা জল জমে তৈরি হ্রদ এবং অন্য়ান্য হ্রদ রয়েছে ৯৬টি।
ইসরোর রিপোর্ট অনুযায়ী, হিমবাহ গলে যেভাবে হ্রদগুলির আয়তন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে বিস্ফোরণের সম্ভাবনা আরও বেড়ে যাচ্ছে। এর ফলে সংলগ্ন এলাকার পরিকাঠামো, জনজীবন এবং পরিবেশের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে বলে জানিয়েছে ইসরো।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন