দীর্ঘ ১৫ মাস লড়াই চালিয়ে জয় ছিনিয়ে আনলেন কৃষকরা। তিন 'কালা কৃষি আইন'-এর বিরুদ্ধে প্রায় ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন কৃষকরা। এআইকেএস, বিকেইউ সহ দেশের একাধিক কৃষক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নেতৃত্বে দিল্লির সিঙ্ঘু সহ একাধিক সীমান্ত অঞ্চলে কৃষকরা গত বছরের নভেম্বর থেকে একটানা অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে জয় ছিনিয়ে নিলেন। আন্দোলনের ঐক্যবদ্ধ শক্তির কাছে মাথা নত করতে বাধ্য হল কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ‘ফতেহ আরদাশ’ (বিজয় উৎসব) পালিত হবে বলে জানিয়েছেন কৃষক নেতৃত্ব।
এদিন এক ট্যুইট বার্তায় কৃষকদের ঐতিহাসিক এই জয়কে অভিনন্দন জানিয়েছেন সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। এদিনের ট্যুইটে তিনি বলেন - "কৃষক সংগ্রামের ঐতিহাসিক বিজয়কে সেলাম জানাই। এই বছরের দীর্ঘ শান্তিপূর্ণ সংগ্রামের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি ও দৃঢ়তা স্বাধীন ভারতে নজিরবিহীন।"
বৃহস্পতিবার ৯ নভেম্বর সিঙ্ঘু সীমান্তে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নেতৃত্বের বৈঠক থেকে আপাতত আন্দোলন তুলে নেবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিন কৃষি আইন বাতিল, ন্যূনতম মজুরি আইন সংক্রান্ত আইন পাশ সহ কৃষকদের অধিকাংশ দাবি মানতে বাধ্য হয়েছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। এদিনই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে লিখিতভাবে এই প্রতিশ্রুতি পাবার পর আন্দোলন তুলে নেবার সিদ্ধান্ত নেয় কৃষক নেতৃত্ব। জানা গেছে, আগামী ১১ ডিসেম্বর তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেবেন এবং ওইদিন থেকেই ফিরে যেতে শুরু করবেন কৃষকরা।
কৃষক নেতৃত্বের পক্ষ থেকে আগামী শনিবার, ১১ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় সিঙ্ঘু এবং টিকরি সীমান্ত থেকে ফতেহ মার্চ (বিজয় মিছিল)-এর ডাক দেওয়া হয়েছে। সূত্র অনুসারে আগামী ১৩ ডিসেম্বর অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরে কৃষকরা বিশেষ প্রার্থনায় যোগ দেবেন। আগামী ১৫ ডিসেম্বর দিল্লিতে পরবর্তী বৈঠকের ডাক দিয়েছে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা।
তিন কৃষি আইন বাতিল, ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের জন্য আইন প্রণয়নের দাবির পাশাপাশি আন্দোলনরত সমস্ত কৃষকদের বিরুদ্ধে থাকা মামলা প্রত্যাহারের দাবিও মেনে নিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সমস্ত রাজ্যকেও এই সংক্রান্ত মামলা তুলে নেবার অনুরোধ জানানো হবে। এছাড়াও কৃষকদের বিদ্যুৎ সংক্রান্ত বিল সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা সহ সমস্ত পক্ষের সঙ্গে আলোচনার পরেই আনা হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। যদিও এই চিঠিতে আন্দোলনে শহিদ ৭০২ জন কৃষকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বা পুনর্বাসনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে কিছু জানানো হয়নি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন