আগামী ৩১ জানুয়ারি দেশ জুড়ে ‘বিশ্বাসঘাতকতা দিবস’ পালন করবে Samyukt Kisan Morcha (SKM)। শুক্রবার কৃষক আন্দোলনের যৌথ মঞ্চ এসকেএম-এর পক্ষ থেকে এই ঘোষণা করা হয়েছে। ওইদিন জেলা এবং ব্লক স্তরে বড় আকারের প্রতিবাদ বিক্ষোভের সাথে দিনটিকে পালন করা হবে।
গতকাল সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার সমন্বয় কমিটির বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে জানানো হয় - "মোর্চার সাথে যুক্ত সমস্ত কৃষক ইউনিয়ন এই প্রতিবাদ অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পালন করবে। আশা করা হচ্ছে যে এই কর্মসূচি দেশের অন্তত ৫০০ জেলায় সংগঠিত হবে।"
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, "৩১ জানুয়ারির প্রতিবাদ বিক্ষোভে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে একটি স্মারকলিপিও জমা দেওয়া হবে। বৈঠকে এই কর্মসূচির প্রস্তুতি পর্যালোচনা করা হয়েছে।"
এসকেএম গত ১৫ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত তাদের পর্যালোচনা সভায় পরবর্তী সময়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কৃষকরা বক্তব্য অনুসারে, সরকার তাদের প্রতারণা করেছে। প্রসঙ্গত, তিন বিতর্কিত কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে কৃষকরা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন করেছিল।
তিন কৃষি আইন বাতিল করার সরকারি সিদ্ধান্তের পরে আন্দোলন প্রত্যাহার করে এসকেএম ঘোষণা করেছিল যে সরকার সমস্ত কৃষকদের জন্য ন্যূনতম সমর্থন মূল্য (এমএসপি) এর জন্য আইনি সমর্থন সহ তাদের অন্যান্য দাবিগুলি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা না করা হলে আন্দোলন আবার শুরু হতে পারে।
এসকেএম-এর মতে, সরকারের কৃষক বিরোধী অবস্থানের বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কারণ গত ১৫ জানুয়ারী এসকেএমের বৈঠকের পরেও সরকার ৯ ডিসেম্বর, ২০২১ তারিখের চিঠিতে দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলির একটিও পূরণ করেনি।
এসকেএম জানিয়েছে, "বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার বা শহীদদের পরিবারকে (যারা বছরব্যাপী আন্দোলনে মারা গেছেন) ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে গত দুই সপ্তাহে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এখনও ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বিষয়ে সরকার কোনো কমিটি গঠনের ঘোষণা করেনি। অতএব, মোর্চা সারাদেশের কৃষকদেরকে 'বিশ্বাসঘাতকতার দিন' পালনের মাধ্যমে সরকারের কাছে তাদের ক্ষোভ জানানোর আহ্বান জানিয়েছে।"
এসকেএম আরও স্পষ্ট করেছে যে 'মিশন উত্তরপ্রদেশ' অব্যাহত থাকবে, যার মাধ্যমে "এই কৃষক বিরোধী শাসনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা হবে"।
এসকেএম বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "গত বছর লখিমপুর খিরিতে মর্মান্তিক ঘটনার সাথে জড়িত থাকা আশিস মিশ্রের বাবা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনিকে বরখাস্ত ও গ্রেপ্তার না করার জন্য ভারতীয় জনতা পার্টিকে উচিৎ শিক্ষা দিতে উত্তরপ্রদেশের জনগণের কাছে আহ্বান জানানো হবে।
এই প্রচারাভিযানকে কার্যকর করার জন্য আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি এক সাংবাদিক সম্মেলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। উত্তরপ্রদেশ জুড়ে জনসভা করার পাশাপাশি মোর্চার পক্ষ থেকে লিফলেট, সাংবাদিক সম্মেলন, সোশ্যাল মিডিয়া-র মাধ্যমে প্রচার চালানো হবে। এসকেএম-এর অধীনে সমস্ত সংগঠনের কাছে বিজেপি বিরোধী বার্তা পৌঁছে দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট হবে ১০ ফেব্রুয়ারি।
এসকেএম আরও জানিয়েছে, আগামী ২৮ এবং ২৯ মার্চ কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির দ্বারা ডাকা দেশব্যাপী ধর্মঘটকে মোর্চা সম্পূর্ণরূপে সমর্থন করছে। বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠনের দাবি অনুসারে চারটি শ্রম বিরোধী কোড প্রত্যাহারের পাশাপাশি কৃষকদের জন্য এমএসপির মতো বিষয়গুলির জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে।
এসকেএম-এর পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নাম, ব্যানার বা মঞ্চ আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত পাঞ্জাবের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে কোনও রাজনৈতিক দল বা প্রার্থী ব্যবহার করবে না।
- with inputs from IANS
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন