বিশ্ব উষ্ণায়ন রোধে অভিনব উদ্যোগ বসিরহাটের পিতা ও পুত্রের। দশ বছরে মোট ১০ লক্ষ বৃক্ষরোপণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন তাঁরা। সাধুবাদ জানাচ্ছেন গ্রামবাসীরা।
বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে জেরবার হচ্ছে গোটা পৃথিবী। উষ্ণায়নের ফলে মেরুপ্রদেশে বরফ ধীরে ধীরে বরফ গলেই চলেছে। তার ফলে বাড়ছে নদী ও সমুদ্রের জলস্তর। অদূর ভবিষ্যতে একাধিক দেশ ও শহরের জলের তলায় যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ভূবিজ্ঞানীরা। এই বিশ্ব উষ্ণায়নের অন্যতম কারণ হচ্ছে নির্বিচারে বৃক্ষচ্ছেদন। গাছ কেটে ফেলার কারণে ক্রমশই তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের রাজ্য সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তেও বিগত বছরের তুলনায় ২০২৩ সালে তাপমাত্রা ৪৫-৫০ ডিগ্রি পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল।
গাছ কাটার তুলনায় গাছ লাগানোর পরিমাণটা খুবই কম। আর এই সমস্যা সমাধানের জন্য এবার এগিয়ে এলো বসিরহাটের পিতা-পুত্রের জুটি। বসিরহাট পৌরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পেশায় বীমা কর্মী শিব শম্ভু দত্ত ও তাঁর ছেলে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র জিষ্ণু দত্ত বাইকে গাছের চারা নিয়ে বসিরহাট থেকে ছুটে চললেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। তাঁদের একটাই লক্ষ্য ভারতের যেখানে যেখানে উদ্ভিদের সংখ্যা কম সেখানে সেখানে বৃক্ষরোপণ করা।
পিতা ও পুত্রের গন্তব্যের মধ্যে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও গুজরাটের মতো রাজ্যগুলি। বাইক করেই সমস্ত রাজ্যে রাজ্যে গিয়ে তাঁরা চারাগাছ লাগাবেন। দশ বছরে ১০ লক্ষটি চারা গাছ লাগানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন তাঁরা। উদ্দেশ্য একটাই, দেশ সহ সারা পৃথিবীকে উষ্ণায়নের তীব্র জ্বালা থেকে কিছুটা দূরে রাখা।
পরিবেশ প্রেমী শিব শম্ভু দত্ত বলেন, "পৃথিবীকে বিশ্ব উষ্ণায়ন থেকে দূরে রাখতে আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী ১০ বছর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বাইকে করে গিয়ে আমরা বাবা-ছেলে মিলে ১০ লক্ষ চারা রোপণ করবো। যেভাবে আমাদের পৃথিবীতে গরম বেড়েই চলেছে তার ফলে জেরবার হচ্ছে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সমস্ত ধরণের জীবজন্তু। তাই আমাদের এই উদ্যোগ।"
তিনি আরও বলেন, 'আমার একটা গ্রামীণ বিকাশ সোসাইটি নামে একটা ট্রাস্ট আছে। আমার সহযোগীরাও আছেন তাতে। সেই ট্রাস্টের মাধ্যমে গাছ লাগানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। নিজেদের উদ্যোগে রাস্তার ধারে গাছ লাগাবো। এছাড়া সরকারি জায়গা লিজ পেলে আরও সুবিধা হবে। গত এক সপ্তাহে স্কুল ও ক্লাব মিলিয়ে মোট ১০ হাজার গাছ লাগিয়েছি। আমার উদ্দেশ্য যেন প্রতিটি পরিবার ১০টি করে গাছ লাগায়। 'হার পরিবারকা বাদা, লাগায়েঙ্গে দশ পদা' এই স্লোগানকে সামনে রেখে আমি এগোতে চাই'।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন