তেজি শেয়ার বাজারের জোরে ২০২১এর ফোর্বসের তালিকায় সবচেয়ে ধনী ১০০ ভারতীয়ের মোট সম্পদের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে রেকর্ড ৭৭৫ বিলিয়ন ডলারে। গত ১২মাসে যোগ হয়েছে ২৫৭বিলিয়ন ডলার। বৃদ্ধির হার ৫০শতাংশ। তালিকার শীর্ষে মুকেশ আম্বানি। তাঁর নীট সম্পদের পরিমাণ ৯২.৭ বিলিয়ন ডলার। ২০০৮থেকেই তিনি সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। আম্বানি সম্প্রতি তাঁর রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের মাধ্যমে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ক্ষেত্রে ১০বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন।
এই বাম্পার বছরে তালিকায় ৮০ শতাংশের বেশির সম্পদ আরও বেড়েছে। ৬১জনের বেড়েছে ১ বিলিয়ন ডলার বা তার বেশি।
ভারতের ১০০ধনীদের মোট সম্পদের পরিমাণ বৃদ্ধিতে পঞ্চম স্থানের কাছাকাছি পরিকাঠামো ব্যবসায়ী গৌতম আদানি। তিনি টানা এই নিয়ে তৃতীয় বছর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছেন।
শতাংশ ও ডলারের অঙ্কে সবচেয়ে লাভবান হয়েছেন আদানি। তাঁর সব কোম্পানির শেয়ারেরই দাম বেড়েছে। ফলে আগের ২৫.২বিলিয়ন ডলারের তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেড়ে তাঁর সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৪.৮বিলিয়ন ডলার।
সফটওয়্যার জায়ান্ট এইচসিএল-এর প্রতিষ্ঠাতা শিব নাদার আছেন তিন নম্বরে।সম্পদের পরিমাণ ৩১বিলিয়ন ডলার। দেশের তেজি প্রযুক্তি ক্ষেত্রের জন্য সম্পদ বেড়েছে ১০.৬বিলিয়ন ডলার।
রিটেইলিং ম্যাগনেট রাধাকৃষণ দামানি আছেন চতুর্থ স্থানেই। তাঁর নীট সম্পদ ১৫.৪বিলিয়ন ডলার থেকে প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে হয়েছে ২৯.৪বিলিয়ন ডলার। মার্চে শেষ হওয়া অর্থবছরে তাঁর সুপারমার্কেট চেইন অ্যাভেনিউ সুপারমার্টস ২২টি নতুন দোকান খুলেছে।
ভারতে এপর্যন্ত ৮৭কোটির বেশি টিকাকরণ হয়েছে। এর জন্য আংশিক ধন্যবাদ প্রাপ্য সেরাম ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়া। যার প্রতিষ্ঠাতা ভ্যাকসিন কোটিপতি সাইরাস পুনাওয়ালার নীট সম্পদ ১৯বিলিয়ন ডলার নিয়ে আছেন পঞ্চম স্থানে। তাঁর ব্যক্তিগত মালিকানার কোম্পানি কোভিশিল্ড তৈরি করে অ্যাস্ট্রাজেনেকার লাইসেন্স নিয়ে। এছাড়া আরও কয়েকটি টিকা তারা তৈরি করছে।
এবছরের গোড়ায় শুরু হওয়া কোভিড১৯ এর মারাত্মক দ্বিতীয় ঢেউ থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ভারত বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম অর্থনীতির প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে এনেছে।
এবছরের তালিকায় আছে নতুন ছজন,যার মধ্যে অর্ধেকই লাভজনক রাসায়নিক ক্ষেত্রের। তাদের মধ্যে আছেন অশক বুব (৯৩ তম স্থান, ২.৩বিলিয়ন ডলার)। যাঁর ক্লিন সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি জুলাই মাসে শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত হয়।
দীপক নাইট্রাইটের দীপক মেহতা (৯৭ তম স্থান, ২.০৫বিলিয়ন ডলার), আলকিল আমাইন্স কেমিক্যালসেটর যোগেশ কোঠারি (১০০ তম স্থান, ১.৯৪বিলিয়ন), ডায়গনস্টিক্স চেইন ডঃ লাল প্যাথল্যাবসের এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান অরভিন্দ লাল (৮৭ তম স্থান, ২.৫৫বিলিয়ন ডলার) এই প্রথম এলেন তালিকায়। অতিমারির ফলে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ায় তাঁর কোম্পানির শেয়ার গত বছরে বেড়েছে দ্বিগুণ।
দেশে আইপিও বাড়ায় প্রপার্টি ম্যাগনেট ও রাজনীতিবিদ মঙ্গল প্রভাত (৪২ তম স্থান, ৪.৫বিলিয়ন ডলার) আবার ঢুকেছেন তালিকায়। এপ্রিলে তালিকাভুক্ত হয়েছে তাঁর সংস্থা ম্যাজ্রোটেক ডেভেলপার।
আরও চারজন প্রত্যাবর্তনের তালিকায় আছেন। প্রতাপ রেড্ডি (৮৮ তম স্থান, ২.৫৩ বিলিয়ন ডলার) তাঁর অ্যাপেলো হসপিটাল এন্টারপ্রাইজ কোভিড ১৯ রোগীদের পরীক্ষা ও চিকিৎসা করে।
গত বছর বাদ পড়েছিলেন এমন ১১জন আছেন এবারের তালিকায়। এবারে অবশ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্তির উচ্চসীমা বাড়ানো হয়েছে। ন্যূনতম ১.৯৪ বিলিয়ন ডলারেই তালিকায় স্থান পাওয়া গেছে। গত বছর এই পরিমাণ ছিল ১.৩৩বিলিয়ন ডলার।
এশিয়া ওয়েলথ সম্পাদক ও ফোর্বস এশিয়ার ভারতীয় সম্পাদক নাজনিন কারমালি বলেছেন, 'এবছরের তালিকায় ভারতের দৃঢ়তা ও করতে পারি মনোভাবের প্রতিফলন ঘটেছে। যদিও কোভিড ১৯ কেড়ে নিয়েছে অনেক জীবন ও জীবিকা। ইংরেজি ভি আকারের প্রত্যাবর্তনের আশা শেয়ার বাজারে ইন্ধন জুগিয়েছে যার ফলে ভারতের ধনীরা পৌঁছেছেন নতুন উচ্চতায়।
তালিকায় থাকতে ন্যূনতম সম্পদের পরিমাণ ২বিলিয়ন ডলারে পৌঁছতে চলেছে, ফলে শীর্ষ ১০০র ক্লাব আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে।'
- with Agency Inputs
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন