‘লেখাপড়া ছেড়ে গবাদি পশু চরাতে বাধ্য হয়েছিলাম’, শৈশবের দারিদ্র্য নিয়ে অকপট সিদ্দারামাইয়া

তিনি লেখেন, "আমার মন সর্বদা অসহায় শ্রেণীর মানুষের কষ্ট নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল। ছাত্রাবস্থায় আমি মহীশূরে একটি ভাড়া ঘরে কঠিন জীবনযাপন করেছি। সেই সময়ের কষ্টগুলি আমাকে একটি গভীর দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে দিয়েছে।"
সিদ্দারামাইয়া
সিদ্দারামাইয়াফাইল ছবি সংগৃহীত
Published on

কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রীর আসনে দ্বিতীয়বার বসতে চলেছেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা সিদ্দারামাইয়া। ২০ মে, শনিবার নেবেন শপথ। তাঁর আগে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন তিনি। শৈশবে দারিদ্র্যের মধ্যে কিভাবে তিনি বড় হয়েছেন, আজ সেকথা তুলে ধরেছেন সিদ্দারামাইয়া।

বৃহস্পতিবার, এক প্রেস বিবৃতিতে সিদ্দারামাইয়া লিখেছেন, ‘আমার জন্ম ১৯৪৮ সালের ১২ আগস্ট, মহীশূর জেলার বরুণা হোবলি’র সিদ্দারমনা হুন্ডি (Siddaramana Hundi)-তে। মূলত, কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল ছিল আমার পরিবার। সে সময় যখন ম্যাট্রিক পাস করা ছিল কষ্টকর, তখন আমি পরিবারের প্রথম সদস্য হিসাবে স্নাতক পাশ করি।’

তিনি লিখেছেন, ‘আমি আমার শৈশবের দিনগুলি কাটিয়েছি সিদ্দারমনা হুন্ডিতে। বাড়ির কঠিন পরিস্থিতির কারণে আমি কিছু সময়ের জন্য লেখাপড়া বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিলাম এবং আমাকে গবাদি পশু চরাতে বলা হয়েছিল। কিন্তু, পড়াশোনার প্রতি আমার আগ্রহের কথা জানতেন গ্রামের স্কুলের শিক্ষকরা। তাঁরা আমাকে সেই আগ্রহের স্বীকৃতিও দিয়েছেন সরাসরি IV (চতুর্থ) ক্লাসে ভর্তি হতে সাহায্য করে।’

‘প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার পর আমি মহীশূরে যাই। B.Sc. নিয়ে মহীশূরের যুবরাজ কলেজে ভর্তি হই। বাবা আমাকে ডাক্তার করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমি ভিন্ন পথ বেছে নিয়েছিলাম। ভাগ্যের অন্য পরিকল্পনা ছিল, আমি নিজের স্বপ্ন অনুসরণ করতে গিয়ে আইন নিয়ে পড়াশুনা করি। শারদা বিলাস কলেজ থেকে আইনে ডিগ্রি পাওয়ার পর, আমি চাকরি করেছি। বিদ্যাবর্ধক কলেজের অতিথি অধ্যাপক হিসাবেও যুক্ত ছিলাম।’

‘তবে, আইন নিয়ে চর্চা শুরু করার পরও আদালতে নিজেকে পুরোপুরিভাবে উৎসর্গ করতে পারিনি। আমার মন সর্বদা অসহায়-শোষিত শ্রেণীর মানুষের কষ্ট নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল। এই সময়ই আমি সমাজতান্ত্রিক চিন্তাবিদ ডঃ রামমনোহর লোহিয়ার প্রভাবে আসি। ছাত্রাবস্থায় আমি মহীশূরে একটি ভাড়া ঘরে কঠিন জীবনযাপন করেছি। সেই সময়ের কষ্টগুলি আমাকে একটি গভীর দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে দিয়েছে, এবং দরিদ্র মানুষের কল্যাণে বেশ কয়েকটি পরিকল্পনা রূপায়ণে সাহায্য করেছে।’

‘আমি জানি দরিদ্ররা কী চরম পরীক্ষা দেয় এবং কিভাবে কষ্টের মুখোমুখি হয়। আমি নিজেই সেই অসুবিধাগুলি অনুভব করেছি। সেই কারণেই আমি আন্না ভাগ্য (দরিদ্রদের বিনামূল্যে বা ভর্তুকি মূল্যে খাদ্যশস্য সরবরাহ), ক্ষীরা ভাগ্য (দুধ সরবরাহ) এবং বিদ্যাশিরি’র (শিক্ষার জন্য সহায়তা প্রদান) মতো প্রকল্প চালু করেছিলাম।’

এদিন, কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণার পর সিদ্দারামাইয়া আরও লিখেছেন, ‘প্রতিটি কন্নড়বাসীর সুবিচার পেতে এবং কর্ণাটকের মর্যাদাকে সমুন্নত রাখতে নিরলসভাবে কর্মসূচী চালিয়ে যাবো।’ তিনি জানান, ‘আমরা গ্যারান্টি বাস্তবায়ন করতে এবং রাজ্যের জন্য সেরাটা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in