২০১৪ সাল থেকে ২০২১ সালের ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন ঘটনায় মোট ৪৫৬ বার দেশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে। মঙ্গলবার ২৬ জানুয়ারি একই ঘটনার সাক্ষী থাকলো দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকা।
এদিন দিল্লিতে কৃষক আন্দোলনের অংশ হিসেবে হওয়া ট্র্যাক্টর প্যারেড চলাকালীন কিছু অপ্রীতিকর ঘটনার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশে দিল্লির সিঙ্ঘু, গাজীপুর, টিকরি, মুকারবা চক, নাংলোই এবং অন্যান্য বেশ কিছু ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এদিনই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে জম্মু ও কাশ্মীরে মোবাইলে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়। এর আগে এই বছরের ১ জানুয়ারিও সোফিয়ানে তিন যুবকের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলওয়ামা এবং সোফিয়ানে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিলো।
ইন্টারনেট শাট ডাউন ডট ইন-এর পরিসংখ্যান অনুসারে ২০১৪ সালে দেশের কিছু অংশে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছিলো ৬ বার। ২০১৫ সালে তা করা হয় ১৪ বার। ২০১৬ সালে তা করা হয় ৩১ বার। ২০১৭ সালে ৫ বার। ২০১৮ সালে ১৩৪ বার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছিলো। ২০১৯ সালে তা বন্ধ করা হয় ১০৬ বার। ২০২০ সালে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ইন্টারনেট বন্ধ হয় ৮৩ বার এবং ২০২১ সালে আজ পর্যন্ত ৩ বার।
রাজ্যওয়াড়ি হিসেব ধরলে একাধিক রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে গত ২০১৪ থেকে বহুবার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে সবথেকে বেশি ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরে – মোট ২৪৩ বার। রাজস্থানে বন্ধ করা হয়েছে ৭২ বার। উত্তরপ্রদেশে ২৯ বার। হরিয়ানায় ১৩ বার। পশ্চিমবঙ্গে ১২ বার। মহারাষ্ট্র, বিহার ও গুজরাটে ১১ বার করে। মধ্যপ্রদেশে ৭ বার। মণিপুর ও আসামে ৬ বার করে। ত্রিপুরা ও ওড়িশায় বন্ধ হয়েছে ৫ বার। এছাড়াও বিভিন্ন রাজ্যে বেশ কয়েকবার করে বন্ধ হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। এর মধ্যে ২০১৯-এর ৪ আগস্ট থেকে ২০২০-র ৪ মার্চ পর্যন্ত সর্বাধিক ২১৩ দিন ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ ছিলো জম্মু ও কাশ্মীরে। একইভাবে ৪ আগস্ট ২০১৯ থেকে ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯ – দীর্ঘ ১৪৫ দিন ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয়েছিলো ১৪৫ দিন। ৮ জুলাই ২০১৬ থেকে ১৯ নভেম্বর ২০১৬ – দীর্ঘ ১৩৩ দিন জম্মু ও কাশ্মীরে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ ছিলো। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গে ১৮ জুন ২০১৭ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ – দীর্ঘ ১০০ দিন দার্জিলিং-এ ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ ছিলো।
যদিও শীর্ষ আদালত জানিয়েছে – ইন্টারনেট ব্যবহার করার অধিকার দেশের নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। জম্মু ও কাশ্মীরে ইন্টারনেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে করা এক মামলায় ২০২০ সালের ১০ জানুয়ারি শীর্ষ আদালত জানায় – ধারা ১৯ অনুসারে ইন্টারনেট সংযোগ নাগরিকদের মৌলিক অধিকার।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন