Pinki Haryan: শৈশবে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করতেন, তিনিই এখন ডাক্তার - পিঙ্কি হরিয়ানের গল্প জানুন

People's Reporter: শৈশবে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করতেন। খাবার খুঁজতেন আস্তাকুঁড়ে। সেই পিঙ্কি হরিয়ান বর্তমানে চিকিৎসক। চিন থেকে ডাক্তারি পাশ করে দেশে ফিরেছেন তিনি।
পিঙ্কি হরিয়ান
পিঙ্কি হরিয়ানছবি - সংগৃহীত
Published on

শৈশবে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করতেন। খাবার খুঁজতেন আস্তাকুঁড়ে। সেই পিঙ্কি হরিয়ান বর্তমানে চিকিৎসক। চিন থেকে ডাক্তারি পাশ করে সদ্য দেশে ফিরেছেন তিনি। বর্তমানে দিন রাত পরিশ্রম করছেন ভারতে ডাক্তারি শুরু করার জন্য। কীভাবে একজন ভিক্ষুক থেকে চিকিৎসক হলেন পিঙ্কি? জানুন সেই কাহিনী।

২০০৪ সালে পিঙ্কিকে ভিক্ষা করতে দেখেন তিব্বত উদ্বাস্তু সন্ন্যাসী তথা ধর্মশালার একটি দাতব্য ট্রাস্টের ডিরেক্টর লোবাসাং জাময়াং। সে সময় কোনও কথা হয়নি। এর কয়েকদিন পরে পিঙ্কির বস্তিতে পরিদর্শনে যান লোবাসাং। পিঙ্কির বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পিঙ্কির বাবা কাশ্মীরি লালকে বোঝান মেয়েদের শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা।

এরপর সে বছরই পিঙ্কিকে ধর্মশালার দয়ানন্দ পাবলিক স্কুলে ভর্তি করানো হয়। হতদরিদ্র শিশুদের জন্য দাতব্য ট্রাস্টের তৈরি একটি হস্টেলে থাকার ব্যবস্থা হয় তাঁর। ওই ট্রাস্টের সভাপতি তথা লোবসাঙের ঘনিষ্ঠ বন্ধু অজয় শ্রীবাস্তব জানান, প্রথম দিকে বাড়ির কথা ভেবে মনখারাপ করত পিঙ্কি। কিন্তু পড়াশোনায় মনোযোগী ছিলেন।

উচ্চ মাধ্যমিকের পর ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট দেন পিঙ্কি। র‍্যাঙ্কের কারণে বেসরকারি কলেজে সুযোগ পান তিনি। কিন্তু সেখানে পড়াশোনা করার জন্য আর্থিক সামর্থ্য ছিল না তাঁর। এরপর ২০১৮ সালে ব্রিটেনের একটি দাতব্য ট্রাস্টের সহয়তায় চিনের একটি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন পিঙ্কি। সম্প্রতি ডাক্তারি পাশ করে দেশে ফিরেছেন তিনি। কিন্তু ভারতে ডাক্তারি করার অনুমতি নেই। সেকারণে বর্তমানে ‘ফরেন মেডিক্যাল গ্র্যাজুয়েট এগজামিনেশন (এফএমজিই)-এর প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। ওই পরীক্ষায় পাশ করলেই ভারতে ডাক্তারি করতে পারবেন পিঙ্কি।

২০ বছরের অপেক্ষার পর চিকিৎসক হতে পেরে খুশি পিঙ্কি। এক সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থাকে পিঙ্কি জানিয়েছেন, “শৈশব থেকেই দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে বড় হতে হয়েছে। পরিবারকে দুর্দশায় দেখেও কিছু করার ক্ষমতা ছিল না আমার। স্কুলে ভর্তি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার জীবনে সফল হওয়ার জেদ চাপে।“

অতীতের স্মৃতিচারণ করে পিঙ্কি জানান, “ছোটবেলায় আমি একটা বস্তিতে থাকতাম। আমাকে আমার পরিবারের দুঃখ দূর করতে হবে— এটাই ছিল সবচেয়ে বড় প্রেরণা।“ তিনি আরও জানিয়েছেন, “সেই সময়ে (চার বছর বয়সেই) আমি জানতাম না যে এক জন চিকিৎসকের কী কাজ। কিন্তু আমি সবসময় মানুষকে সাহায্য করতে চাইতাম।“

তবে তাঁর সাফল্যের সমস্ত কৃতিত্ব বৌদ্ধ ভিক্ষু লোবসাংকেই দিয়েছেন পিঙ্কি। পিঙ্কির কথায়, “ওঁর (লোবসাং) জন্যই নিঃস্ব এবং দরিদ্র শিশুদের সাহায্য করার ভাবনা এসেছে। আমি স্কুলে থাকাকালীন তিনিই আমাকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছিলেন। আমার প্রতি ওঁর বিশ্বাসের কারণেই আমি ভাল করে পড়াশোনা করতে পেরেছি।“

অন্যদিকে লোবসাং জানিয়েছেন, “আমি বুঝতে পারিনি যে এই শিশুদের মধ্যে এত প্রতিভা রযেছে। ওরা আদর্শ হয়ে উঠেছে এবং অন্যদের অনুপ্রাণিত করছে।“

পিঙ্কি হরিয়ান
Toy Train: দার্জিলিং ছাড়াও ভারতের আরও চার জায়গায় টয় ট্রেনে চড়ে উপভোগ করতে পারেন পাহাড়ি সৌন্দর্য্য

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in