প্রকাশিত হল ২০২৪ সালের বিশ্ব ক্ষুধা সূচক (Global Hunger Index 2024)। ১২৭টি দেশের মধ্যে সমীক্ষা চালিয়ে ২০২৪ সালের ক্ষুধা সূচকের রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। এই রিপোর্টে ভারত ১০৫তম স্থানে রয়েছে। 'গুরুতর' ক্ষুধা সমস্যাযুক্ত দেশের তালিকায় রয়েছে ভারত। এমনকি শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মায়ানমার এবং বাংলাদেশের অবস্থাও ভারতের থেকে ভাল। ভারতের ঠিক পিছনেই রয়েছে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান।
আইরিশ সংস্থা কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড (Concern Worldwide) এবং জার্মান সংস্থা ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফ (Welthungerhilfe) যৌথভাবে প্রতিবছর ক্ষুধা সূচকের রিপোর্ট প্রকাশ করে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কত মানুষ অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন, কোন দেশের কত মানুষ গুরুতর অপুষ্টিতে ভুগছেন, শিশু মৃত্যুর হার, মহিলা স্বাস্থ্য ইত্যাদি তথ্যের উপর ভিত্তি করে প্রকাশিত হয় এই ক্ষুধা সূচক। ১১ অক্টোবর ২০২৪ সালের রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। ০ থেকে ১০০-এর মাপকাঠিতে প্রতিটি দেশকে পয়েন্ট দেওয়া হয় এবং সেই পয়েন্টের বিচারেই তালিকায় যথাস্থানে ঠাঁই হয় সংশ্লিষ্ট দেশের। এবারের ক্ষুধাসূচকে ভারতের স্কোর ২৭.৩।
শিশুদের অপুষ্টিতে ভারত ক্রমাগত গুরুতর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। এখানে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুর হার ২.৯ শতাংশ এবং অপুষ্টির হার প্রায় ১৩.৭ শতাংশ। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে ৩৫.৫ শতাংশের বেশি শিশুর বৃদ্ধি স্তব্ধ হয়ে গেছে অর্থাৎ শিশুরা খর্বাকৃতি হয়ে রয়ে গেছে। দেশের মোট জনসংখ্যার ১৩.৭ শতাংশের বেশি অপুষ্টির শিকার।
ক্ষুধা সূচক রিপোর্টে ভারতের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে নেপাল, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশের মতো দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলি। শ্রীলঙ্কার স্থান ৫৬, নেপালের স্থান ৬৮ এবং বাংলাদেশের স্থান ৮৪। উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশ সম্প্রতি রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সঙ্কটের সম্মুখীন হয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের স্থান যথাক্রমে ১০৯ এবং ১১৬। এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে বেলারুশ, চীন, কোস্টারিকা, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, কুয়েত, হাঙ্গেরির মতো দেশগুলি।
২০৩০ সালের মধ্যে পৃথিবী থেকে ক্ষুধা মুছে ফেলার (Zero Hunger) লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে এবারের রিপোর্টে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ১২৭টি দেশের মধ্যে ৪২টি দেশে অনাহারে থাকা মানুষের সংখ্যা এখনও গুরুতর অথবা উদ্বেগজনক। এর জন্য লিঙ্গ বৈষম্য এবং জলবায়ু পরিবর্তনকে মূল কারণ হিসেবে দায়ী করা হয়েছে।
২০২৩ সালে ভারতের স্থান ১২৫টি দেশের মধ্যে ১১১ নম্বরে ছিল। ২০২২ সালে ভারতের স্থান ছিল ১০৭ নম্বরে। তবে আগের রিপোর্টগুলির সাথে এই রিপোর্টের তুলনা চলে না। কারণ সূচকের মাপকাঠিতে এবার বেশ কিছু রদবদল ঘটানো হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন