গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে চিন্তিত সকলেই। ইতিমধ্যেই বিশ্বজুড়ে তার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। পরিবেশবিদদের আশংকা এখন থেকেই যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে না ভাবলে আগামী দিনে উষ্ণায়ন যত বাড়বে ততই বিপর্যয় নেমে আসবে মানবজীবনের ওপর। তাঁদের আরও আশংকা এই বিপর্যয়ের অংশ হিসেবে বিশ্বের বেশ কিছু শহর চলে যেতে পারে জলের তলায়। এখন থেকেই সঠিক পরিকল্পনা না করা হলে এবং উষ্ণায়ন না কমানো গেলে আগামী ২০৩০-এর মধ্যে জলের তলায় চলে যেতে পারে বিশ্বের অনেক শহরই। এই সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে টাইমআউট ডট কমে। ক্লাইমেট সেন্ট্রাল ডট ওআরজিকে উদ্ধৃত করে লেখা ওই প্রতিবেদনের তালিকায় আছে আমাদের প্রাণপ্রিয় শহরও। একনজরে দেখে নেওয়া যাক কোন কোন শহরের তালিকা তৈরি করেছেন পরিবেশবিদরা।
এই তালিকায় প্রথম স্থানে আছে নেদারল্যান্ডের আমস্টারডম। এই শহরকে নীচু শহর বলা হয়। ২০৩০ সালের মধ্যে জলের তলায় চলে যেতে পারে এই শহর।
তালিকায় দ্বিতীয় স্থান ইরাকের বসরা শহরের। ইরাকের প্রধান বন্দর শহর বসরা শাত-আল-আরব নদীর তীরে। বসরা এবং তার সংলগ্ন অঞ্চল সমুদ্রের জলস্তর ক্রমশ বেড়ে চলায় বিপদের সম্মুখীন হতে পারে।
আমেরিকার নিউ ওরলিয়ান্স আছে তালিকায় তৃতীয় স্থানে। সমুদ্রের জলস্তর বেড়ে চলায় বিপর্যয়ের মুখে পড়ার সম্ভাবনা এই শহরের।
ইটালীর ভেনিস শহর এই তালিকায় চতুর্থ স্থানে আছে। আগামী দিনে এই শহর জোড়া বিপর্যয়ের সামনে পড়তে পারে। জলস্তর বেড়ে চলায় প্রতি বছর ২ মিলিমিটার করে ডুবছে এই শহর।
ভিয়েতনামের হো চি মিন সিটি আছে পঞ্চম স্থানে। যেখানে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে নেমে আসতে পারে বড় বিপর্যয়। ক্রমাগত জলস্তর বেড়ে চলায় পরিবেশবিদরা আশংকা প্রকাশ করে জানিয়েছেন আগামী কয়েক বছরে বারবার বন্যার কবলে পড়তে পারে এই শহর এবং আগামী কয়েক বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ জলের তলায় চলে যেতে পারে।
ভারতের কলকাতা আছে তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে। পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী, গঙ্গা নদী তীরবর্তী এই শহরের বিস্তীর্ণ অংশ আগামী কয়েক বছরের মধ্যে জলের তলায় চলে যেতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে। এর সঙ্গেই জলে ডুবতে পারে দক্ষিণ ২৪ পরগণার বিস্তীর্ণ অংশ।
থাইল্যান্ডের ব্যাঙ্কক শহর আছে তালিকার সপ্তম স্থানে। এই শহর সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১.৫ মিটার উঁচুতে অবস্থিত। ফলে সমুদ্রে জলস্তর যত বাড়বে ততই বিপদ ঘনিয়ে আসবে এই শহরের। আগামী ২০৩০-এর মধ্যে সমুদ্র তীরবর্তী থা খাম এবং সামুট প্রাকান অঞ্চল সম্পূর্ণ জলের তলায় চলে যেতে পারে।
গায়নার জর্জ টাউন আছে তালিকার আট নম্বর স্থানে। গায়নার রাজধানী শহর জর্জ টাউন চরম বিপর্যয়ে পড়তে পারে। কারণ এই শহরের ৯০ শতাংশ মানুষ উপকূলবর্তী অঞ্চলে বসবাস করেন।
আমেরিকার সাভান্না আছে তালিকার নবম স্থানে। জর্জিয়ার এই শহরকে হ্যারিকেন ঝড়ের হটস্পট বলা হয়। এই শহরকে ক্রমশ চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলছে সমুদ্র। সাভান্না এবং ওগিচি নদীতেও বাড়ছে জলস্তর। সাম্প্রতিক সময়ে বারবার এই শহর হ্যারিকেন ঝড় এবং আচমকা বন্যার মুখে পড়েছে। ধীরে ধীরে এই শহরেরও জলের তলায় চলে যাবার সম্ভাবনা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন