সন্ন্যাস ধর্ম গ্রহণের জন্য ২০০ কোটি টাকার সম্পত্তি দান করে দিলেন গুজরাটের এক ধনকুবের দম্পতি। গুজরাটের হিম্মতনগরের বাসিন্দা জৈন সম্প্রদায়ের ভবেশ ভান্ডারি ও তাঁর স্ত্রী গত ফেব্রুয়ারি মাসে নিজেদের সমস্ত সম্পত্তি দান করেছেন। এখন তাঁরা মু্ক্তির সন্ধানে পরিব্রাজনে যাবেন।
ভবেশ ভান্ডারি পেশায় ব্যবসায়ী। তাঁর নির্মাণ ব্যবসা ছিল। জানা গেছে, ওই দম্পতি সন্ন্যাস গ্রহণের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন তাঁদের সন্তানদের কাছ থেকে। দুবছর আগে ভবেশ ভান্ডারির ১৯ বছর বয়সী ও ১৬ বছর বয়সী দুই ছেলে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন।
এবার সন্তানদের দেখানো পথে হাঁটলেন বাবা-মাও। জাগতিক মোহ ত্যাগ করে ভান্ডারি দম্পতি পা রাখতে চলেছেন সন্ন্যাস দুনিয়ায়। আগামী ২২ এপ্রিল দিক্ষা নেবেন তাঁরা। এরপর পারিবারিক বন্ধন ছিন্ন করতে হবে তাঁদের। খালি পায়ে দেশভ্রমণ করবেন তাঁরা। ওই দম্পতিকে দেওয়া হবে দু’টি সাদা পোশাক, একটা ভিক্ষাপাত্র এবং একটি সাদা সম্মার্জনী বা ঝাঁটা। ‘রজোহরণ’ নামের ওই ঝাঁটা দিয়ে নিজেদের বসার স্থান ঝেড়ে নেন জৈন সাধকরা। যাতে তাঁদের জন্য কোনও কীটপতঙ্গের মৃত্যু না হয়।
সম্প্রতি ভাণ্ডারী দম্পতি ৩৫ জনকে সঙ্গে করে চার কিলোমিটার বিস্তৃত একটি মিছিল বের করেছিলেন। সেই মিছিলে তারা তাঁদের ফোন, এসি সহ সমস্ত সম্পত্তি দান করেন। সেই মিছিলের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ওই দিন ওই দম্পতিকে রাজকীয় পোশাকে রথে চড়ে দান করতে দেখা যায়।
ভান্ডারি পরিবারের এই সিদ্ধান্ত রাজ্যের পাশাপাশি গোটা দেশের মানুষেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তবে ভান্ডারি দম্পতিই প্রথম নয়। এর আগে গত বছর গুজরাটের এক হীরা ব্যবসায়ী ও তাঁর স্ত্রীও একই সিদ্ধান্ত নেন। উল্লেখ্য, তাঁদের ১২ বছরে মেয়ে সন্ন্যাস গ্রহণের পাঁচ বছর পর ওই দম্পতি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। বলা হয়েছিল, সন্তানের থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ওই দম্পতি।
উল্লেখ্য, জৈন ধর্মে 'দীক্ষা' গ্রহণ একটি উল্লেখযোগ্য অঙ্গীকার। যেখানে ব্যক্তি বস্তুগত আরাম ছাড়াই জীবনযাপন করেন, ভিক্ষা করে বেঁচে থাকেন এবং সারা দেশে খালি পায়ে ঘুরে বেড়ান।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন