কোভিড পরবর্তী সময়ে ২০২০ সালে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আনুমানিক ৩৭৫.৮ মিলিয়ন প্রায় ৩৭.৫ কোটি মানুষ ক্ষুধার সম্মুখীন হয়েছে। ২০১৯ সালের তুলনায় এই সংখ্যা প্রায় ৫৪ মিলিয়ন বেশি। ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল অর্গানাইজেশন (FAO), এবং রাষ্ট্রসংঘের চিন্ড্রেন্স ফান্ড (ইউনিসেফ)-এর এক সমীক্ষায় এই তথ্য সামনে এসেছে।
২০২১ সালের এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় আঞ্চলিক ওভারভিউ অফ ফুড সিকিউরিটি অ্যান্ড নিউট্রিশন অনুসারে, শুধুমাত্র এই অঞ্চলেই, ১.১ বিলিয়নেরও বেশি মানুষ ২০২০ সালে পর্যাপ্ত খাবার পায়নি - যা মাত্র এক বছরে প্রায় ১৫০ মিলিয়ন মানুষের বৃদ্ধি।
এই সমীক্ষার অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর, FAO-র এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের আঞ্চলিক প্রতিনিধি জং-জিন কিম জানিয়েছেন "এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে খাদ্য নিরাপত্তা এবং পুষ্টির অবস্থার ওপর সাম্প্রতিক এই প্রতিবেদন এক ভয়াবহ ছবি তুলে ধরেছে৷ একটি স্বাস্থ্যকর খাবারের ক্রমাগত দাম বৃদ্ধি এবং ক্রমাগত উচ্চ হারে দারিদ্র্য এবং আয় বৈষম্যের কারণে এই অঞ্চলের প্রায় ১.৮ বিলিয়ন মানুষ স্বাস্থ্যকর খাবার পাচ্ছেন না৷"
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যে এই অঞ্চল ইতিমধ্যেই ২০১৯ সাল থেকেই খাদ্য নিরাপত্তা এবং পুষ্টি পরিস্থিতিতে কঠিন অবস্থার সম্মুখীন হয়েছে। কিন্তু কোভিডজনিত কারণ পরিস্থিতি আরও খারাপ করেছে। ক্রমবর্ধমান সংক্রমণের পাশাপাশি, কোভিড নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থার কারণে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক কার্যকলাপে ধাক্কা লাগায় এই পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। যার ফলে খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলে ব্যাঘাত ঘটে নতুন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
প্রতিবেদনে সংকটের সময় যে সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিলো সে সম্পর্কে সরকারের প্রতিক্রিয়ারও প্রশংসা করেছে।
এই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে উন্নত খাদ্য পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে, ভবিষ্যতে কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থাগুলিকে আরও ভাল উত্পাদন, ভাল পুষ্টি, ভাল পরিবেশ এবং আরও ভালোভাবে বাঁচার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
ইউনিসেফের পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক মার্কোলুগি করসি জানিয়েছেন, "আমাদের লক্ষ্য অবশ্যই এই অঞ্চলের ছোট-বড় পরিবারের কৃষকদের চাহিদার সাথে সাথে আদিবাসী, মহিলা এবং যুবকদের মতো অন্যান্য দুর্বল গোষ্ঠীর চাহিদাগুলির ওপর নজর রাখা৷ কারণ অপুষ্টি দূর করার জন্য প্রত্যেকের প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবার তৈরি করে এঁরাই।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থাকে রূপান্তরিত করার মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা এবং পুষ্টির উন্নতির জন্য কঠোর পরিশ্রম করার সুযোগ আছে। সেগুলিকে বাস্তবায়িত করাই এখন প্রথম লক্ষ্য এবং সেই লক্ষ্যে দ্বিতীয় সাসটেইনেবল ডেভলপমেন্ট গোল (SDG2) বৈঠকে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন