অরুণা শানবাগ
অরুণা শানবাগছবি - সংগৃহীত

আরজি কর কাণ্ডের শুনানিতে প্রধান বিচারপতির মুখে অরুণা শানবাগ প্রসঙ্গ! ৫১ বছর আগে ঠিক কী হয়েছিল?

People's Reporter: অরুণার মামলাটি আদালতে উঠেছিল। কিন্তু অভিযুক্ত ওয়ার্ড বয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণের কোনও প্রমাণ মেলেনি। সেই সময় পায়ুসঙ্গম অপরাধ হিসেবে গণ্য হত না। চুরি ও নির্যাতনের মামলা দায়ের হয়।
Published on

আরজি কর কাণ্ডের শুনানি চলাকালীন ৫১ বছর আগে ঘটে যাওয়া এমনই এক নৃশংস ঘটনার কথা মনে করালেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। ১৯৭৩ সালে হাসপাতালেই ধর্ষণ করা হয়েছিল ট্রেনি নার্স অরুণা শানবাগকে। যার সঠিক বিচার হয়নি বলেই সকলের অভিযোগ।

মঙ্গলবার আরজি কর কাণ্ডের শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টে। শুনানিতে রাজ্য পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকায় সমালোচনা করে শীর্ষ আদালত। শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতি জানান, অরুণা শানবাগের সাথেও এমন নৃশংস ঘটনা ঘটেছিল।

অরুণা ছিলেন কর্ণাটকের বাসিন্দা। মুম্বইয়ের কিংগ এডওয়ার্ড মেমোরিয়াল (কেইএম) হাসপাতালে নার্সিং ট্রেনিং-র জন্য যান। ১৯৭৩ সালের ২৭ নভেম্বর ডিউটির পরে হাসপাতালের বেসমেন্টে একটি রুমে পোশাক বদলাচ্ছিলেন অরুণা। সেই সময়ই তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে হাসপাতালেরই অস্থায়ী ওয়ার্ড বয় সোহনলাল ভরত বাল্মীকী। ওই নার্সের গলায় কুকুরের চেন দিয়ে বাঁধে অভিযুক্ত। ধর্ষণ করার সময় সোহনলাল দেখে অরুণার ঋতুস্রাব হচ্ছে। তখন জোর করে পায়ুসঙ্গম করে সোহনলাল। ঘটনার ১১ ঘণ্টা পর সকালে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় অরুণাকে।

দীর্ঘক্ষণ চেন দিয়ে বাঁধা অবস্থায় থাকার কারণে অরুণার মাথা এবং সুষুম্না কাণ্ডে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। যার কারণে কোমায় চলে যান তিনি। টানা ৪২ বছর কোমায় ছিলেন তিনি। সেই সময় ন্যায় চেয়ে পথে নেমেছিল মুম্বাইয়ের নার্সরা।

২০১৫ সালে পিঙ্কি বিরানি নামের এক সমাজকর্মী সুপ্রিম কোর্টে অরুণার স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর আর্জি খারিজ হয়ে যায়। ওই বছরই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় অরুণার। যতদিন জীবিত ছিলেন ততদিন হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে নার্স সকলেই তাঁর সেবা করেছেন।

অরুণার মামলাটি আদালতে উঠেছিল। কিন্তু অভিযুক্ত ওয়ার্ড বয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণের কোনও প্রমাণ মেলেনি। সেই সময় পায়ুসঙ্গম অপরাধ হিসেবে গণ্য হত না। চুরি ও নির্যাতনের মামলা দায়ের হয় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে। ওই অভিযুক্ত সাত বছর জেল হেফাজতে থাকার পর মুক্তি পায়। ৫০ বছর পর আরজি কর কাণ্ড মনে করিয়ে দিচ্ছে সেই নৃশংস অত্যাচার।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in