বিশ্বের মধ্যে সবথেকে বেশি সাপের কামড়ে মৃত্যু হয় ভারতে। ২০০০ সাল থেকে ২০১৯ পর্যন্ত সাপের কামড়ে প্রায় ১২ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে ভারতে। অর্থাৎ প্রতি বছর গড়ে ৫৮ হাজার লোকের মৃত্যু হয়েছে সাপের কামড়ে।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ - ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর রিসার্চ ইন রিপ্রোডাক্টিভ হেলথ-এর একটি নতুন গবেষণায় এই দাবি করা হয়েছে। গত ৫ আগস্ট প্লেস ওয়ান জার্নালে এই রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতি বছর গোটা বিশ্বে প্রায় ৫৪ লক্ষ সাপের কামড়ের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে এনভেনমিং (সাপের কামড় থেকে বিষক্রিয়া) হয় ১৮ লক্ষ থেকে ২৭ লক্ষ। প্রতি বছর সাপের কামড়ের কারণে ৮১ হাজার ৪১০ থেকে ১ লক্ষ ৩৭ হাজার ৮৮০ জনের মৃত্যু হয় গোটা বিশ্বে।
এছাড়াও অন্যান্য রোগের তুলনায় সাপের কামড়ে শরীরে স্থায়ী অক্ষমতা সৃষ্টি এবং অঙ্গচ্ছেদের ঘটনা প্রায় তিনগুণ বেশি। সাপের কামড়ে আহতদের অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে নানা সমস্যায় ভোগেন যেমন বিকলাঙ্গতা, অঙ্গচ্ছেদ, চোখের সমস্যা, কিডনির সমস্যা, মানসিক যন্ত্রণা ইত্যাদি।
প্রতি বছর সবথেকে বেশি সাপের কামড়ের ঘটনা ঘটে ভারতে। সাপের কামড়ে বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর প্রায় ৫০ শতাংশই ভারতে হয়। কৃষক, শ্রমিক, মেষপালক, সাপ উদ্ধারকারী, আদিবাসী ও অভিবাসী জনগোষ্ঠী, যাঁরা সেভাবে কোনো স্বাস্থ্য পরিষেবা পাননা তাঁরাই সবথেকে বেশি সাপের কামড়ের শিকার হন।
সচেতনতার অভাব, সাপের কামড় রোধে অপর্যাপ্ত জ্ঞান, প্রাথমিক চিকিৎসা না জানা, প্রচুর পরিমাণে প্রচলিত কুসংস্কার, লাইফসেভিং ট্রিটমেন্ট পেতে দেরি, সাপের কামড়ের চিকিৎসার জন্য প্রশিক্ষিত মেডিক্যাল অফিসারদের অনুপস্থিতি - এইসব কারণে ভারতে সাপের কামড়ে মৃত্যুর সংখ্যা এতো বেশি।
সাপের কামড় থেকে সৃষ্ট বিষক্রিয়াকে হাই-প্রায়োরিটি নেগলেক্টেড ট্রপিক্যাল ডিজিজ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ২০৩০ সালের মধ্যে গোটা বিশ্বে সাপের কামড়ে মৃত্যু অর্ধেক করার লক্ষ্যে রোডম্যাপ লঞ্চ করেছে হু। যদিও এর অনেক আগে ২০১৩ সাল থেকেই ICMR-NIRRH এই কাজ করে আসছে। জাতীয় টাস্ক ফোর্সের অর্থায়নে পরিচালিত জাতীয় গবেষণার মাধ্যমে তাঁরা তাঁদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন