শনি ও রবিবার দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে জি২০ সম্মেলন। এই দুদিনের অনুষ্ঠানের জন্য ৪,১০০ কোটিরও বেশি টাকা খরচ হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মীনাক্ষী লেখি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি নথি পোস্ট করে একথা জানিয়েছেন। যদিও সরকারের তরফ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রসঙ্গে এখনও কিছু ঘোষণা করা হয়নি। দিল্লি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন সংস্থা এই খরচ করেছে বলে উল্লেখ করেছেন বিজেপি নেত্রী৷
পাশাপাশি, গত কয়েকবছরের জি২০ সম্মেলন নিয়ে বাজেট বরাদ্দের ঘোষণা থেকে অঙ্ক কষে একটি আনুমানিক হিসেব প্রকাশ করেছে সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-ও। সেখানেও একই হিসেব দেওয়া রয়েছে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মীনাক্ষী লেখি সোশ্যাল মিডিয়ায় যে নথি পোস্ট করেছেন, সেখানেও একই কথা বলা হয়েছে। দিল্লি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন সংস্থা এই খরচ করেছে বলে উল্লেখ করেছেন বিজেপি নেত্রী৷
তথ্য অনুযায়ী, যেখানে জি২০ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, প্রগতি ময়দানে ‘ভারত মণ্ডপম’ নামের সেই কনভেনশন সেন্টার তৈরি করতে খরচ হয়েছে ২,৪০০ কোটি টাকা। ২০১৭ সালের কেন্দ্রীয় বাজেটে এই বরাদ্দ ঘোষণা করা হয়েছিল। এছাড়াও বাকি অর্থের অধিকাংশ ব্যয় হয়েছে নিরাপত্তা, সৌন্দর্যায়ন,রাস্তা, ফুটপাথ, রাস্তার সাইনবোর্ড, আলো ইত্যাদির রক্ষণাবেক্ষণে।
জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের জন্য নয়াদিল্লির রাস্তা নতুন করে সাজানো হয়েছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে ১২৫টি ফোয়ারা এবং ৭০টি বড় ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে। আটটি দেশ থেকে ১ লাখ ফুলের চারা আনা হয়েছে। রাস্তার ধারে ধারে ফুলের টব রাখা হয়েছে। এছাড়াও সারা বিশ্ব থেকে প্রায় ২,০০০ গাছ আনা হয়েছে। এই সব কিছুর জন্য কয়েক কোটি অর্থ ব্যয় করা হয়েছে।
সরকারি নথি বলছে, কেন্দ্রীয় বাণিজ্য এবং শিল্প মন্ত্রকের অধীনস্ত আইটিপিও প্রায় ৩,৬০০ কোটি টাকা ব্যয় করেছে বিভিন্ন পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য। সৌন্দর্যায়নের জন্য পৃথক পৃথক খরচ করেছে নিউ দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন(NDMC), পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্ট(PWD) এবং দিল্লি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি(DDA)। এর মধ্যে NDMC খরচ করেছে ৬০ কোটি টাকা, PWD ৪৫কোটি টাকা এবং DDA ১৮ কোটি টাকা খরচ করেছে।
নথি অনুযায়ী, নিরাপত্তার পিছনে দিল্লি পুলিশ খরচ করেছে ৩৪০ কোটি টাকা। বিভিন্ন জায়গায় বন্দুক তাক করে রয়েছেন স্নাইপাররা। হেলিকপ্টার থেকে দিল্লির বিভিন্ন অলিগলিতে নজর রাখছেন সেনাবাহিনী এবং ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড (এনএসজি)-এর কমান্ডোরা।
রোড সারফেস ট্রান্সপোর্ট মন্ত্রকের তরফ থেকে ২৬ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রগতি ময়দান পর্যন্ত রাস্তাকে আন্তর্জাতিক রূপ দিতে খরচ হয়েছে ২২ কোটি টাকা।
জি২০ সম্মেলনে যোগ দিতে আসা বিশ্বনেতারা মোট ২৫টি হোটেলে থাকবেন। মার্কিন রাষ্ট্রপতি বাইডেন থাকবেন আইটিসি মৌর্যের চাণক্য স্যুটে, যেটি সব থেকে ব্যয়বহুল। নেতাদের সোনা এবং রুপোর থালাতে খাবার পরিবেশন করা হবে। এছাড়াও দিল্লি ও গুরুগ্রামের বিভিন্ন হোটেল মিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কামরা ভাড়া নেওয়া হয়েছে।
বাইডেন ছাড়াও জি২০ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতে আসছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রনেতারা। আজ সন্ধ্যায় বাইডেনের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন