শ্রমজীবী মানুষের আয়ের মধ্যে বৈষম্য ক্রমশ বাড়ছে। সামাজিক অগ্রগতির জন্য অবিলম্বে মানুষের আয়ের মধ্যে সমতা ফেরানো প্রয়োজন। সম্প্রতি, এক রিপোর্ট পেশ করে এই দাবি জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদ।
‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ নিয়ে দেশজুড়ে প্রচারাভিযানে নেমেছে কেন্দ্রীয় সরকার। দেশের স্বাধীনতার ৭৫ বছর নিয়ে মেতেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। এরই মাঝে একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে- স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও দেশের মানুষের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্যে ঘোচেনি। উল্টে দিন দিন তা বেড়েই চলেছে। নতুন প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেশের সর্বোচ্চ উপার্জনকারীদের মধ্যে মাসে ২৫ হাজার টাকা আয় করেন, এমন মানুষের সংখ্যা মাত্র ১০ শতাংশ। অর্থাৎ, বাকি ৯০ শতাংশের মাসিক আয় ২৫ হাজার টাকার নীচে!
আরও বিস্ময়কর তথ্য হল, ভারতের কর্মরত জনসংখ্যার প্রায় ১৫ শতাংশের মাসিক গড় আয় ৫ হাজার টাকার কম। অন্যদিকে, দেশের শীর্ষ ১ শতাংশ মানুষের মোট আয় লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। তাঁদের মোট আয়ের পরিমাণ হয়েছে জাতীয় আয়ের ৬ থেকে ৭ শতাংশ! আর, শীর্ষ ১০ শতাংশ উপার্জনকারীর মোট আয়, জাতীয় আয়ের এক তৃতীয়াংশ। এই ১০ শতাংশ কর্মরত মানুষের আয় দিন-দিন কমেই চলেছে। গ্রামীণ এলাকায় এই বৈষম্য আরও বেড়েছে।
২০১৭-১৮ অর্থবর্ষ থেকে ২০১৯-২০ সময়কালের মধ্যে সম্পদের অসম বন্টনের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে এই রিপোর্টে। এজন্য রিপোর্টে শুধুমাত্র সম্পদের অনুমান করা হয়নি, মূলধনের প্রবাহকে বোঝার জন্য, এই প্রথমবার রিপোর্টে আয় বণ্টনের বৈষম্যের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। জানা যাচ্ছে, ২০১৯-২০ সালে দেশের বেকারত্বের হার ছিল ৪.৮ শতাংশ।
একইসঙ্গে রিপোর্টে বলা হয়েছে, আয়ের মধ্যে বৈষম্যের বিষয়ে যে তথ্য উঠে এসেছে, তা সংস্কারের কৌশল, সামাজিক অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধির জন্য রোডম্যাপ তৈরিতে সাহায্য করবে। রিপোর্টে শ্রেণি সংক্রান্ত তথ্য সমেত উপার্জনের স্ল্যাব তৈরি করা, সর্বজনীন মৌলিক আয় প্রতিষ্ঠা করা, কর্মসংস্থান, বিশেষ করে উচ্চশিক্ষিতদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পগুলির জন্য বাজেট বাড়ানোর মতো বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। একইসঙ্গে, শহরাঞ্চলে এমজিনারেগা আইন ২০০৫ (MGNREGA) এর কর্মসূচী (১০০ দিনের কাজ) চালুর সুপারিশ করেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন