রাজস্থানে নির্বাচনী জয়ের পরেই জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে। ইতিমধ্যেই নাম ভেসে উঠেছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া, রাজসামন্দের সাংসদ দিয়া কুমারী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং যোধপুরের সাংসদ গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত-এর।
যদিও বিজেপি সূত্রের খবর অনুসারে, এই তিন নাম রাজনৈতিক মহলের আলোচনায় উঠে এলেও অন্য যে কোনও নাম এই তিন নামের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে উঠে আসতে পারে।
সূত্র অনুসারে, ইতিমধ্যেই গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াতকে দিল্লিতে ডাকা হয়েছে এবং তিনি শীঘ্রই জাতীয় রাজধানীতে যাবেন। দিল্লিতে আজই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হতে পারে এবং সেখানেই কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের ছেলে বৈভবকে পরাজিত করার পরে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সুনজরে ছিলেন। তাঁকে কেন্দ্রীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ জলশক্তি মন্ত্রক দেওয়া হয়েছিল এবং সমস্ত শীর্ষ নেতারা তাঁর পক্ষে ছিলেন। এবারের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারের সময় এই মন্ত্রণালয়ের কাজের কথাও তিনি বারবার উল্লেখ করেছেন। রাজনৈতিক মহলের এক অংশের অনুমান, বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া নন, এবার মুখ্যমন্ত্রী হবেন শেখাওয়াত।
অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য অনেকটাই এগিয়ে আছেন রাজসমন্দের সাংসদ দিয়া কুমারী, যিনি জয়পুর রাজপরিবারের সদস্য। দিয়া কুমারী আগে সাওয়াই মাধোপুরের বিধায়ক ছিলেন। আরএসএস-এর পছন্দের তালিকায় তিনিই প্রথমে আছেন বলে একটি সূত্র থেকে দাবি করা হয়েছে।
রাজস্থানের দু’বারের মুখ্যমন্ত্রী এবং ঝালরাপাটনের বিধায়ক বসুন্ধরা রাজের নামও এই তালিকায় আছে। শীর্ষ পদে থেকে সরকার চালনায় তাঁর অভিজ্ঞতার কারণেই তিনি শীর্ষ নেতৃত্বের পছন্দের তালিকায় আছেন। এছাড়াও বসুন্ধরা রাজের সমর্থনে প্রায় ৪৫ জন বিজেপি প্রার্থী রয়েছেন যাদের মনোনয়নের পেছনে বসুন্ধরার অবদান রয়েছে। এছাড়াও বেশ কয়েকজন নির্দলকেও সঙ্গে পাবেন বসুন্ধরা রাজে।
বসুন্ধরা রাজেকে মুখ্যমন্ত্রী করা হতে পারে এবং তাঁর অধীনে দুইজন উপমুখ্যমন্ত্রী নিয়োগ করা যেতে পারে বলে জল্পনা রয়েছে। যদিও বিজেপি যেহেতু সংখ্যাগরিষ্ঠতার চেয়ে অনেকটাই বেশি আসন পেয়েছে তাই মুখ্যমন্ত্রীর নাম দিল্লি থেকে ঘোষিত হবার সম্ভাবনাই বেশি।
আলওয়ারের সাংসদ এবং তিজারা প্রার্থী বাবা বালকনাথ-এর নামও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ভেসে উঠেছে। তিনি একটি শক্তিশালী হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করেন এবং ৩৯ বছর বয়সী বালকনাথকে 'রাজস্থানের যোগী'ও বলা হয়। তিনি ৬ বছর বয়সে গৃহত্যাগ করেন এবং একজন শ্রদ্ধেয় তপস্বী হন। রাজস্থানের রাজনীতিতে তিনি একজন জনপ্রিয় নেতা এবং রাজস্থানের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। গেরুয়া পোশাকধারী পরা বালক নাথকে বিজেপির সামনের সারির নেতাদের একজন বলে মনে করা হয়।
এই কয়েকটি নাম ছাড়াও ক্ষীণভাবে উঠে এসেছে প্রবীণ নেতা ওম মাথুর এবং নারায়ণ পানচারিয়ার নাম।
বিজেপি যেহেতু শীর্ষ পদের ক্ষেত্রে চমক দিতে পছন্দ করে তাই সবাইকে চমকে দিয়ে অন্য কেউও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব কাকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেবেন তা কেবল সময়ই বলে দেবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন