সোমবার, ১ নভেম্বর থেকে কেরালায় খুলে যাচ্ছে স্কুল। কোভিড জনিত কারণে দীর্ঘ ২০ মাস বন্ধ থাকার স্কুল খুলে দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেরালা সরকার। আগামীকাল স্কুল খোলা উপলক্ষ্যে ছাত্র ছাত্রীদের স্বাগত জানাতে কেরালা সরকারের শিক্ষা দপ্তর আয়োজন করছে ‘প্রবেশানোলসভাম’ (Pravesanolsavam) অনুষ্ঠানের। রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে স্লোগান তোলা হয়েছে ‘থিরিকে স্কুলিলেকুয়া’ বা ‘স্কুলে ফিরে এসো’।
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ভি শিবানকুট্টি এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, কোভিড প্রোটোকল মেনে স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং আগামীকাল সমস্ত ছাত্র ছাত্রীদের স্বাগত জানানো হবে।
যদিও পরিসংখ্যান অনুসারে কেরালার কোভিড পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। শনিবারের তথ্য অনুসারে রাজ্যে সংক্রমিত হয়েছেন ৭,৪২৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩৫৮ জনের। তাই আগামীকাল কত ছাত্র স্কুলে এসে পৌঁছবে তা নিয়ে সংশয় আছে।
রাজ্যের এক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার রাজেশ নায়ার আইএএনএসকে জানিয়েছেন, আমার বাচ্চারা প্রাথমিক স্তরে পড়ে এবং আমি এখনই তাকে অফলাইন ক্লাসে পাঠাতে চাইছি না। রাজ্যে কোভিড এখনও আছে। তাই আমি আমার মেয়েদের স্কুলে পাঠাবো না।
যদিও শিক্ষামন্ত্রী সংবাদমাধ্যমে আবেদন জানিয়েছেন, অকারণ আতঙ্কগ্রস্ত হবার কিছু নেই। সরকারের পক্ষ থেকে স্কুল খোলার জন্য সমস্তরকম প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সমস্ত কোভিড প্রোটোকল মেনেই স্কুল খোলা হচ্ছে। ছাত্র ছাত্রী এবং অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হবেন না।
আগামীকাল থেকে প্রাথমিক স্তর, ক্লাস ১০ ও ক্লাস ১২-র ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে আসবে। আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে শুরু হবে অষ্টম, নবম এবং একাদশ শ্রেণীর পঠনপাঠন।
শিক্ষামন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, শুরুতেই পঠন পাঠনের ওপর বেশি জোর দেওয়া হবেনা। আপাতত খেলাধুলো এবং বিনোদনের মাধ্যমে শিশুদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু হবে। যথাসম্ভব বেশি ছাত্রছাত্রীকে দ্রুত স্কুলে ফেরানোর জন্য খুব তাড়াতাড়ি শিক্ষক, অভিভাবকদের মধ্যে সভা করে সকলের আস্থা ফেরানোর কাজ শুরু করা হবে।
যদিও আশংকা করা হচ্ছে দীর্ঘ সময় স্কুলে না আসার কারণে বহু ছাত্রছাত্রীই স্কুলে আসার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। বিশেষ করে উপজাতি প্রধান এলাকায় এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। ওয়াইনাদের উপজাতি অধ্যুষিত এলাকা থিরুনেল্লির এক কৃষক পুভন থাম্পান জানিয়েছেন, শিশুরা স্কুলে যাবার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে এবং ইন্টারনেট সংযোগ খারাপ হবার কারণে তাঁদের পক্ষে অনলাইন ক্লাস করাও সম্ভব হয়নি। ফলে এইসময় তারা জঙ্গল থেকে মাছ ধরে, ফল পেড়ে সময় কাটিয়েছে। এখন আবার তাদের স্কুলে ফেরাতে হলে সরকারের উপজাতি উন্নয়ন দপ্তরকে সক্রিয় হতে হবে। নয়তো ওই বাচ্চাদের আর স্কুলে ফেরানো যাবেনা।
এই প্রসঙ্গে কেরালা শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, স্কুল খোলার পরেই ড্রপ আউটের সংখ্যা নিয়ে পর্যালোচনা করতে হবে এবং সেই শিশুদের চিহ্নিত করে তাদের আবার পড়াশোনার মূল স্রোতে ফেরানোর চেষ্টা চালাতে হবে। স্কুল খোলার এক সপ্তাহ পর থেকেই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই কাজ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা দপ্তরের এক আধিকারিক।
দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার পর নতুন করে স্কুল খোলার আগে ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সমস্ত স্কুলে বিশেষ সাফাই অভিযান চালানো হয়েছে। যে কাজে সক্রিয় ভাবে অংশ নিয়েছেন সাধারণ মানুষ বলেও শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
- with Agency Inputs
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন