তাঁর হাত ধরেই দেশের নতুন ইতিহাস তৈরি হতে চলেছিল। তাঁকে দেখেই হয়তো ভবিষ্যতে তাঁর মতো অনেকেই রাজনীতির আঙ্গিনায় পা রাখতেন। চলার পথ ফুল বিছানো না হলেও মনে অনেককেই শক্তি পেতেন। কিন্তু না সেই ইতিহাস তৈরি করা হল না দেশের প্রথম রূপান্তরকামী নির্বাচনী প্রার্থীর। গণতান্ত্রিক দেশের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য তাঁকে কুৎসা এবং হুমকির মুখোমুখি হতে হয়। তাই নিজেকে বাঁচাতে নির্বাচন থেকে সরে যেতে বাধ্য হলেন কেরল বিধানসভা নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক সোশ্যাল জাস্টিস পার্টির ২৮ বছরের প্রার্থী অনন্যা কুমারী এলেক্স। শনিবার তিনি নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন।
অনন্যা কেরলের প্রথম রেডিও জকি হয়ে আগেই খ্যাতি পেয়েছিলেন যথেষ্ট। সংবাদ পাঠিকার কাজও করেছেন। নিজের পেশায় সাফল্য আসায় ভেবেছিলেন রাজনীতিতে যোগ দিয়ে রূপান্তরকামী ও সাধারণ মানুষের জন্য কিছু করে দেখাবেন। তাঁর সেই স্বপ্নে বাদ সাধল অন্য রাজনীতি। রূপান্তরকামী হওয়ায় তাঁকে আর পাঁচজন প্রার্থী হিসেবে দেখতে পারলেন না অনেকেই। নাগাড়ে চলতে থাকে কুৎসা, হুমকি। ঘরে বাইরে লড়তে লড়তে শেষপর্যন্ত আর না পেরে ভোটে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত তুলে নিলেন।
অনন্যার অভিযোগ, নিজের দলেই তিনি বাধা পেয়েছেন! সম্মুখীন হয়েছেন অনভিপ্রেত সমস্যার। এক সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থাকে অনন্যা জানিয়েছেন, ‘ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যাল জাস্টিস পার্টি’তেই যৌন হেনস্থা, লিঙ্গ বৈষম্য ও লাঞ্ছনার শিকার হয়েছি আমি। তাই সরে দাঁড়ালাম। ওরা প্রচার পেতে আমাকে নিয়ে খেলতে চাইছিল। আমাকে সামনে রেখে নানা পরিকল্পনাও করছিল।'
অনন্যার বলেন, 'ওরা আমাকে জোর করছিল বর্তমান সরকার সম্পর্কে খারাপ কথা বলতে। যে ভেঙ্গারা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে আমি লড়ছি, সেখানে আমার বিরোধী দলের প্রার্থী সম্পর্কেও কুৎসা ছড়াতে জোর করা হয়। তাছাড়া প্রচারে আমাকে বোরখা পরে থাকতে জোর করে ওরা। আমি এসব চাইনি। এরপরই হুমকি দেওয়া শুরু হয় আমাকে ও আমার কেরিয়ারকে শেষ করে দেওয়া হবে।' অনন্যা স্পষ্ট জানিয়েছেন, ওই দলকে কেউ যেন ভোট না দেন। সাফ জানালেন, আর রাজনীতিতে দেখা যাবে না তাঁকে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন