'এ লড়াই লড়তে হবে, এ লড়াই জিততে হবে' - ব্রিগেডে এই স্লোগান দিয়েই তরুণ প্রজন্মকে উজ্জীবিত করেছিলেন 'কমরেড' বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তাঁর প্রয়াণে সেই স্লোগানকে সামনে রেখেই ভবিষ্যতে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দিচ্ছেন বাম ছাত্র-যুবরা।
২০১১ সালে রাজ্যের ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর ক্রমশ শক্তিক্ষয় হয়েছে বামেদের। আসন সংখ্যা কমতে কমতে বর্তমানে শূন্যে এসে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু 'কমরেড' বুদ্ধবাবু ছিলেন আশাবাদী। শারীরিক অসুস্থতার কারণে সক্রিয় রাজনীতিতে না থাকলেও সারাক্ষণ দলের খবর নিতেন। ছাত্র-যুবদের আন্দোলনকে আরও জোরদার করার বার্তা দিয়ে গেছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ব্রিগেডে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিয়েছিলেন 'এ লড়াই লড়তে হবে, এ লড়াই জিততে হবে'। কিন্তু বৃহস্পতিবার জীবনের লড়াইয়ে হার মানলেন বুদ্ধবাবু।
তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ গোটা দল। এসএফআই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য জানান, কোনো ভাষা নেই বলার। ওনার দেখানো পথেই আগামী দিনে আমাদের লড়াই জারি থাকবে। উনি যা যা নির্দেশ দিয়েছিলেন আমরা সবকিছু মেনেই ভবিষ্যতে এগিয়ে যাব।
রাজ্যের শিক্ষিত বেকার যুবকদের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন বুদ্ধবাবু। ২০১৩ সালে জনপ্রিয় এক বাংলা সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেছিলেন, 'আমাদের রাজ্যের শিক্ষিত বেকার যুবকরা কোথায় যাবে? কম্পিউটার জানা ছেলে মেয়েরা আমাদের রাজ্য ছেড়ে অন্য রাজ্যে চলে যাচ্ছে। তাদেরকে আমরা কাজে লাগাতে পারছি না। কৃষিকে রেখেই শিল্পের কথা ভাবতে হবে'। হাজার হাজার শিক্ষিত বেকার যুবকরা স্বপ্ন দেখেছিলেন বুদ্ধদেবের কথায়। সিঙ্গুরে টাটাকে এনেছিলেন ন্যানো গাড়ি তৈরির কারখানা করার জন্য। কিন্তু তৎকালীন বিরোধী দলের লাগাতার আন্দোলনের ফলে সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
প্রসঙ্গত, শেষ কয়েক বছর তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে অনেক দূরে। শারীরিক সমস্যার কারণে বাড়িতেই থাকেন। শেষবার মহাকরণ থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন ২০১১ তে। শারীরিক অসুস্থতাকে উপেক্ষা করে ২০১৯-এ বামেদের ব্রিগেড সমাবেশে হাজির হলেও নামতে পারেননি গাড়ি থেকে। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগের ব্রিগেড সমাবেশে তাঁর পাঠানো বার্তা পাঠ করা হয়েছিল। এমনকি চলতি বছরের জানুয়ারিতে ব্রিগেডে ডিওয়াইএফআই-এর ইনসাফ যাত্রার শেষে সমাবেশেও তাঁর বার্তা পাঠ করা হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন