ভারতের সেনাবাহিনীর পরবর্তী প্রধান হতে চলেছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। আগামী ৩০ জুন দায়িত্ব গ্রহণ করবেন তিনি। মঙ্গলবার রাতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে একথা। বর্তমানে সেনাবাহিনীর প্রধান পদে রয়েছেন জেনারেল মনোজ পান্ডে। যিনি আগামী ৩০ জুন অবসর নিতে চলেছেন।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বর্তমানে সেনাবাহিনীর উপ-প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। দ্বিবেদীর চীন ও পাকিস্তানের সাথে সীমান্তে বিস্তৃত অপারেশনাল অভিজ্ঞতা রয়েছে। উল্লেখ্য, জেনারেল মনোজ পান্ডের ৩১ মে অবসর নেওয়ার কথা থাকলেও, এক মাসের জন্য তাঁর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল।
মঙ্গলবার রাতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, "লেফটেন্যান্ট জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদীকে সেনাবাহিনীর পরবর্তী প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করেছে সরকার। তিনি বর্তমানে সেনাবাহিনীর উপ-প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। ৩০ জুন বিকেল থেকে তিনি সেনাবাহিনীর পরবর্তী প্রধান হিসাবে দায়িত্ব নেবেন।"
সেনাবাহিনীর প্রধান নির্বাচনের পদ্ধতি হল, বর্তমান প্রধানের অবসর গ্রহণের পর সর্বোচ্চ পদমর্যাদার সেনা বা উপ-প্রধানকে সেনাপ্রধানের পদে উন্নীত করা হয়। সেনাপ্রধানের মেয়াদ থাকে তিন বছর। তবে তিন বছর পূরণ হওয়ার আগেই যদি সেনাপ্রধানের বয়স ৬২ হয়ে যায়, তবে তিনি আর এই পদে থাকতে পারবেন না। বর্তমানে উপেন্দ্র দ্বিবেদী সেনাবাহিনীর সবচেয়ে সিনিয়র অফিসারের পদে রয়েছেন।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদীর সম্পর্কে কিছু কথা -
লেফটেন্যান্ট জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী, ১৯৬৪ সালের ১ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মধ্যপ্রদেশের রেওয়া সৈনিক স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র। ১৯৮৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীর ১৮ জম্মু ও কাশ্মীর রাইফেলে কমিশন লাভ করেন।এছাড়াও তিনি ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ এবং ইউএস আর্মি ওয়ার কলেজের প্রাক্তন ছাত্র। কার্লাইলের ইউএস আর্মি ওয়ার কলেজে তিনি 'বিশিষ্ট ফেলো' পুরস্কার পান।
উপেন্দ্র দ্বিবেদী প্রতিরক্ষা ও ব্যবস্থাপনায় এমফিল এবং কৌশলগত অধ্যয়ন ও সামরিক বিজ্ঞানে দুটি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
তিনি সেনাবাহিনীর উপ-প্রধান হিসেবে নিয়োগের আগে ২০২২-২০২৪ সাল পর্যন্ত পদাতিক বাহিনীর ডিরেক্টর জেনারেল এবং উত্তর কমান্ডের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং-ইন-চিফের মতো বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।
উপেন্দ্র দ্বিবেদীকে পরম বিশেষ সেবা পদক, অতি বিশেষ সেবা পদক এবং তিনজন জেনারেল অফিসার কমান্ডিং-ইন-চিফ (জিওসি-ইন-সি) কম্যান্ডেশন কার্ড দিয়ে সম্মানিত করা হয়েছে। নর্দার্ন আর্মি কমান্ডার হিসেবে তিনি উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে অপারেশনের জন্য কৌশলগত দিক নির্দেশনা করেছিলেন। তিনি জম্মু ও কাশ্মীরে গতিশীল কাউন্টার টেররিজম অপারেশনেরও নির্দেশ দিয়েছেন।
পাশাপাশি, তিনি সীমান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য চীনের সাথে চলমান আলোচনায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ৪০ বছরের সেনা জীবনে তিনি বিভিন্ন কমান্ড, স্টাফ, নির্দেশমূলক এবং বিদেশী কার্যভার দায়িত্ব সহকারে পালন করেছেন। তাঁর কমান্ড নিয়োগের মধ্যে রয়েছে ১৮ জম্মু ও কাশ্মীর রাইফেলস, ২৬ সেক্টর আসাম রাইফেলস, ইন্সপেক্টর জেনারেল আসাম রাইফেলস (পূর্ব)।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন