বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত স্কুলে ভর্তির হার উল্লেখযোগ্য ভাবে কমলো। শতকরার হিসেবে ছাত্র ভর্তি কমেছে প্রায় ৪০ শতাংশ। সম্প্রতি রাজ্য বিধানসভায় এক প্রশ্নের উত্তরে একথা জানা গেছে।
২০১০-১১ সালে মধ্যপ্রদেশের সরকারি স্কুলে প্রথম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্র ভর্তি হয়েছিলো ১০৫ লক্ষ। ২০২১-২১ সালে যে সংখ্যা নেমে এসেছে ৬৪.৩৪ লক্ষতে। সম্প্রতি বিধানসভায় গোয়ালিয়রের কংগ্রেস বিধায়ক প্রবীণ পাঠকের এক প্রশ্নের উত্তরে একথা জানিয়েছেন রাজ্যের স্কুল শিক্ষা মন্ত্রী ইন্দার সিং পারমার।
কংগ্রেস বিধায়ক পাঠক জানিয়েছেন, রাজ্যে গত এক দশকে জনসংখ্যা বেড়েছে ১৮ শতাংশ। তা সত্ত্বেও স্কুলে ভর্তির কী করে এত কমে গেল? পাঠকের এই প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী পারমার জানান, রাইট অফ চিল্ড্রেন টু ফ্রী অ্যান্ড কম্পালসারি এডুকেশন অ্যাক্ট ২০১৯ অনুসারে বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর ২৫ শতাংশ ভর্তির নির্দেশের পর এই হার কমেছে।
পরিসংখ্যান অনুসারে ২০১০-১১ সালে প্রথম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছিলো ১০৫.৩ লক্ষ ছাত্র। ২০১১-১২ তে ১০১.৩৮ লক্ষ, ২০১২-১৩তে ৯৮.৭৬ লক্ষ, ২০১৩-১৪তে ৯৩.৮৮ লক্ষ, ২০১৪-১৫ তে ৮৬.৫৬ লক্ষ, ২০১৫-১৬ তে ৭৮.৯৬ লক্ষ, ২০১৬-১৭তে ৭৪.৩ লক্ষ, ২০১৭-১৮তে ৭১.৩২ লক্ষ, ২০১৮-১৯-এ ৬৭.৪২ লক্ষ, ২০১৯-২০ তে ৬৫.৮৪ লক্ষ এবং ২০২০-২১-এ ৬৪.৩৪ লক্ষ ছাত্র ভর্তি হয়েছে।
বিজেপি সরকারের শিক্ষামন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ২০১০-১১তে রাজ্যে প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছিলো ১৬.১৪ লক্ষ শিশু, ২০২০-২১-এ সেই সংখ্যা নেমে হয়েছে ৬.৯৬ লক্ষ। একইভাবে দ্বিতীয় শ্রেণীর ১৫.৪৬ লক্ষ থেকে নেমে হয়েছে ৮.০৫ লক্ষ, তৃতীয় শ্রেণীতে ১৪.৫৪ লক্ষ থেকে ৭.৮৫ লক্ষ, চতুর্থ শ্রেণীতে ১৩.৯৭ লক্ষ থেকে ৮.৬২ লক্ষ, পঞ্চম শ্রেণীতে ১৩.১৫ লক্ষ থেকে ৮.৩১ লক্ষ, ষষ্ঠ শ্রেণীতে ১১.৬৮ লক্ষ থেকে ৭.৮১ লক্ষ, সপ্তম শ্রেণীতে ১১.০১ লক্ষ থেকে ৮.৩৫ লক্ষ এবং অষ্টম শ্রেণীতে ৯.৩৫ লক্ষ থেকে ৮.৩৯ লক্ষ।
উল্লেখযোগ্যভাবে রাজ্যে শুধুমাত্র গোয়ালিয়র জেলায় ২০১০-১১-র তুলনায় ২০২০-২১-এ ছাত্র ভর্তি কমেছে ৮৮,৭২৪ জন। সিধি এবং সিংরৌলীতে কমেছে যথাক্রমে ৯৬,২৩২ এবং ৮৫,১৭৫ জন।
রাষ্ট্রসংঘের এডুকেশনাল, সায়েন্টিফিক অ্যান্ড কালচারাল অর্গানাইজেশনের নো টিচার, নো ক্লাস – স্টেট অফ দ্য এডুকেশন ফর ইন্ডিয়া, ২০২১ রিপোর্ট অনুসারে মধ্যপ্রদেশের ১,৫৪,০৬৪ সরকারি স্কুলের মধ্যে ৮৪ শতাংশ স্কুলই গ্রামীন এলাকায়। যার মধ্যে ২১,০৭৭টি স্কুলে (১৪%) মাত্র ১ জন করে শিক্ষক আছেন। প্রায় ৭.৭% প্রি প্রাইমারি স্কুলে, ৪.৬ প্রাইমারী স্কুলে এবং ৩.৩ শতাংশ আপার প্রাইমারি স্কুলে নির্ধারিত যোগ্যতামানের তুলনায় কম যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকরা যুক্ত আছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন