বৃহস্পতিবার আচমকাই নবান্নে উপস্থিত হয়েছিলেন শিল্পপতি গৌতম আদানি। সূত্র অনুসারে প্রায় দেড় ঘন্টা সেখানে থাকাকালীন শিল্পে বিনিয়োগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে আলোচনা করেন তিনি। এই বৈঠকের বিষয়ে গৌতম আদানি ট্যুইট করে জানালেও মমতা ব্যানার্জি থেকে রাজ্য প্রশাসন সকলেই আশ্চর্যরকম চুপ। একদিকে কৃষক আন্দোলন সমর্থন, মোদী বিরোধিতা, আদানি বিরোধিতা, অন্যদিকে প্রায় চুপিসাড়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘনিষ্ঠ গৌতম আদানীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর নবান্ন বৈঠক ঘিরে তোলপাড় রাজনৈতিক মহল। বামনেতা সুজন চক্রবর্তী ইতিমধ্যেই একে 'ষড়যন্ত্রের বৈঠক' বলে দাগিয়ে দিয়েছেন।
সূত্রের খবর, এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোর। প্রশাসনিক ভবনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে আদানির বৈঠকের বিষয়ে প্রশাসনের নীরবতা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠছে তেমনি সেই বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রশান্ত কিশোরের উপস্থিতি নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
একদিকে কৃষক আন্দোলন সমর্থন, মোদী বিরোধিতা, আদানি বিরোধিতা, অন্যদিকে প্রায় চুপিসাড়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘনিষ্ঠ গৌতম আদানীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর নবান্ন বৈঠক ঘিরে তোলপাড় রাজনৈতিক মহল।
তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে কৃষকদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কৃষকদের দাবি, আদানি, আম্বানিদের মতো কর্পোরেটদের সুবিধার জন্য কৃষি আইন এনেছে কেন্দ্র সরকার। আদানি, আম্বানিদের পণ্য বাতিলের ডাক দিয়েছিল কৃষকরা। কৃষকদের এই সমস্ত দাবিকে সমর্থন করে আন্দোলনরত কৃষক নেতাদের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নেতৃত্ব রাজ্যে এসে তৃণমূল নেতানেত্রীদের সাথে নিয়ে বিজেপি বিরোধী প্রচারও করেছিলেন। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আদানিকে তৃণমূলের একাধিক নেতা-নেত্রী একাধিকবার আক্রমণ করেছেন। আদানীকে আক্রমণ করে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের একাধিক ট্যুইটের স্ক্রিনশট ঘুরে বেড়াচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এবার সেই আদানির সাথেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠক ঘিরে তোলপাড় রাজনৈতিক মহল থেকে সোশ্যাল মিডিয়া।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আদানিকে তৃণমূলের একাধিক নেতা-নেত্রী একাধিকবার আক্রমণ করেছেন। আদানীকে আক্রমণ করে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের একাধিক ট্যুইটের স্ক্রিনশট ঘুরে বেড়াচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
যদিও সোশ্যাল মিডিয়া উত্তাল দু'দিন আগে থেকেই, যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের বাণিজ্য রাজধানী মুম্বাই সফরে ছিলেন। সেখানে তিনি বলেন, "আমার কৃষকদেরও চাই। আম্বানি-আদানিদেরও চাই।" মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যকে ঘিরে রঙ্গ-তামাশা শুরু হয় নেটদুনিয়ায়, তৈরি হয় একাধিক মিম। আদানির সাথে বৈঠকের পর তা আরও বাড়ে। মা সারদার এক বাণীর অনুকরণে অনেকেই মজা করে বলছেন, "আমি কৃষকের মা, আদানিরও মা।"
আদানি-মমতা বৈঠক নিয়ে রাজনৈতিক মহলেও উঠছে প্রশ্ন। সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর প্রশ্ন, "প্রশাসনিক বৈঠকে ডিএম, এসপিদের প্রকাশ্যে ধমকান মমতাজী। নবান্নে ষড়যন্ত্র বৈঠক বলেই কি এতো গোপনীয়তা?"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন