গ্লোবাল হেলথের শেয়ার, যা মেদান্ত ব্র্যান্ডের অধীনে মাল্টিসুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল পরিচালনা করে, এবং বিকাজি ফুডস ইন্টারন্যাশনাল বুধবার দেশীয় স্টক এক্সচেঞ্জে আত্মপ্রকাশ করেছে। গ্লোবাল হেলথ শেয়ারের মূল্য বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে (BSE) ₹৩৯৮.১৫-তে তালিকাভুক্ত হয়েছে। ১৮.৫% প্রিমিয়ামে এই শেয়ারের ইস্যু মূল্য ছিল ₹৩৩৬ টাকা।
বিকাজি ফুডস-এর শেয়ারের দাম ₹৩০০ টাকা থেকে ৭% বেড়ে ₹৩২১.১৫-এ পৌঁছেছে। ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে (এনএসই), গ্লোবাল হেলথ শেয়ার ১৯.৩% বেড়ে ₹৪০১ টাকায় আত্মপ্রকাশ করেছে, যেখানে বিকাজি ফুডস ৭.৬% বেড়ে ₹৩২২.৮০ তে খোলে। তুলনামূলকভাবে, এদিন BSE সেনসেক্স ৪৭ পয়েন্ট নেমে ৬১,৮২৬ পয়েন্টে ছিল।
তালিকাভুক্তির পরে, গ্লোবাল হেলথের শেয়ারগুলি ২০% বৃদ্ধি পেয়ে BSE-তে ₹৪০৪.০৫-এর পৌঁছেছে, যেখানে বিকাজি ফুডসের শেয়ারের দাম ১১.৭% বেড়ে ₹৩৩৫-এ পৌঁছেছে।
গ্লোবাল হেলথ এবং বিকাজি ফুডস ইন্টারন্যাশনালের তালিকাভুক্তি দালাল স্ট্রিটের প্রত্যাশার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল। কারণ তাদের আইপিওগুলি যথাক্রমে ১০ গুণ এবং ২৭ গুণ বেশি সাবস্ক্রাইব করা হয়েছিল। সাবস্ক্রিপশনের পরিসংখ্যান অনুসারে দুই আইপিওই যোগ্য প্রাতিষ্ঠানিক ক্রেতাদের (কিউআইবি) কাছ থেকে জোরালো চাহিদা থাকলেও, উচ্চ সম্পদশালী ব্যক্তি (এইচএনআই) এবং খুচরা বিনিয়োগকারীদের কাছে তুলনামূলকভাবে কম চাহিদা ছিল।
গ্লোবাল হেলথের ₹২,২০০ কোটির আইপিও ১০ গুণ সাবস্ক্রাইব করেছে
বিখ্যাত কার্ডিওভাসকুলার এবং কার্ডিওথোরাসিক সার্জন ডাঃ নরেশ ত্রেহান দ্বারা প্রতিষ্ঠিত, গ্লোবাল হেলথ পাবলিক অফার থেকে প্রায় ₹২,২০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে, যেটিকে এখন পর্যন্ত ভারতের হাসপাতাল ক্ষেত্রের সর্ববৃহৎ প্রাথমিক পাবলিক অফার (IPO) বলে মনে করা হচ্ছে। ৩-৭ নভেম্বরের মধ্যে খোলা আইপিওটির প্রাথমিক মূল্য ছিল ৩১৯ থেকে ৩৩৬ টাকা। যার লটের আকার ছিল ৪৪টি শেয়ারের। একজন খুচরা বিনিয়োগকারী সর্বাধিক ১৩টি লটের জন্য বা ৫৭২টি শেয়ারের জন্য আবেদন করতে পেরেছিলেন।
ইস্যুতে ₹৫০০ কোটি মূল্যের ইক্যুইটি শেয়ারের নতুন ইস্যু এবং প্রোমোটারদের প্রায় ৫.০৮ কোটি শেয়ারের একটি অফার ফর সেল-এর (OFS) অন্তর্ভুক্ত ছিল। কোম্পানী নতুন ইস্যু থেকে প্রাপ্ত নিট আয়কে সহায়ক সংস্থা, জিএইচপিপিএল এবং এমএইচপিএল-এর ধারের ধারের সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে শোধ করা, সেইসাথে সাধারণ কর্পোরেট উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার জন্য প্রস্তাব করেছে।
যোগ্য প্রাতিষ্ঠানিক ক্রেতাদের (কিউআইবি) নেতৃত্বে আইপিওটি ৯.৫৮ গুণ বেশি সাবস্ক্রাইব করা হয়েছিল, যার কোটা ২৮.৬৪ গুণ বুক করা হয়। অ-প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশটি ৪.০২ গুণ সাবস্ক্রাইব করা হয়, যেখানে খুচরা বিনিয়োগকারীদের অংশটি মাত্র ০.৮৮ গুণ বুক করা হয়েছে।
IPO-এর আগে, কোম্পানিটি ₹৩৩৬ টাকা দামে ১.৯৭ কোটি ইকুইটি শেয়ার বরাদ্দ করে অ্যাঙ্কর বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ₹৬৬২ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। এই প্রাক-আইপিও বিনিয়োগে অংশগ্রহণকারী প্রধান অ্যাঙ্কর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে রয়েছে সিঙ্গাপুর সরকার, নোমুরা, এসবিআই লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, এসবিআই মিউচুয়াল ফান্ড (এমএফ), অ্যাক্সিস এমএফ, এইচডিএফসি এমএফ, আদিত্য বিড়লা সান লাইফ এমএফ, আইসিআইসিআই প্রুডেনশিয়াল এমএফ, কোটাক এমএফ, ম্যাক্স লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি এবং অন্যান্য সংস্থা।
বিকাজি ফুডস আইপিও ২৬.৬৭ গুণ বেশি সাবস্ক্রাইব করেছে
বিকাজি ফুডস ইন্টারন্যাশনালের ₹৮৮১ কোটি টাকার আইপিও বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে জোরালো প্রতিক্রিয়া অর্জন করেছে। এই ইস্যু ২৬.৬৭ গুণ বেশি সাবস্ক্রাইব করেছে, যা ৩ থেকে ৭ নভেম্বরের মধ্যে খোলা হয়। এই ইস্যুতে, শেয়ার প্রতি প্রাইস ব্যান্ড ছিল ₹২৮৫-৩০০ টাকা। যা ছিল শুধুমাত্র বর্তমান শেয়ারহোল্ডারদের দ্বারা বিক্রয়ের জন্য সম্পূর্ণ অফার।
ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ (এনএসই) থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, খাদ্য সংস্থার ইস্যুটি ৫৫,০৪,০০,৯০০ শেয়ারের জন্য বিড পেয়েছে, যেখানে শেয়ার আছে ২,০৬,৩৬,৭৯০টি। অফারটি যোগ্য প্রাতিষ্ঠানিক ক্রেতাদের (কিউআইবি) কাছ থেকে ব্যাপক চাহিদা পেয়েছে। কারণ তাদের জন্য সংরক্ষিত কোটা ৮০ গুণের বেশি সাবস্ক্রাইব করা হ্যেহে। অ-প্রাতিষ্ঠানিক দরদাতাদের জন্য সংরক্ষিত অংশটি ৭.১ গুণ এবং খুচরা বিনিয়োগকারীদের অংশ ৪.৭৭ গুণ বুক করা হয়েছে। সংস্থার যোগ্য কর্মচারীদের জন্য সংরক্ষিত কোটা বুক হয়েছে ৪.৩৮ গুণ।
এছাড়াও, এফএমসিজি কোম্পানি ৩৬ জন অ্যাঙ্কর বিনিয়োগকারীদের প্রতি ₹৩০০ টাকা মূল্যে ৮৭,৩৭,১৯৪টি শেয়ার ইস্যু করে অ্যাঙ্কর বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ₹২৬২.১১ কোটি টাকা তুলেছে।
বিকাজি ফুডস ইন্টারন্যাশনাল হল তৃতীয় বৃহত্তম এথনিক স্ন্যাকস কোম্পানি, যাদের ছ’টি চালু উৎপাদন ইউনিট আছে। যার চারটি বিকানেরে (রাজস্থানে), একটি গুয়াহাটিতে (আসাম) এবং একটি তুমাকুরুতে (কর্নাটকে)। কোম্পানি ভুজিয়া, নিমকি, প্যাকেটজাত মিষ্টি, পাঁপড়, ওয়েস্টার্ন স্ন্যাকসের পাশাপাশি অন্যান্য স্ন্যাকস বিক্রি করে। প্রাথমিকভাবে যার মধ্যে গিফট প্যাক (রকমারি বস্তু), হিমায়িত খাবার, মাটিরি রেঞ্জ এবং কুকিজ রয়েছে। অফার ডকুমেন্ট অনুযায়ী কোম্পানিটি ৩০ জুন, ২০২২-এ শেষ হওয়া গত ছয় মাসে, বিকাজি ব্র্যান্ডের অধীনে ৩০০ টিরও বেশি পণ্য বিক্রি করেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন