সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মঙ্গলবার রাতে নির্বাচনী বন্ডের যাবতীয় তথ্য ওয়েবসাইটে আপলোড করেছে নির্বাচন কমিশন। কোন কোন সংস্থা বন্ড কিনেছে এবং কাদের দেওয়া হয়েছে সেই তথ্যও প্রকাশ করা হয়েছে। তালিকা খতিয়ে দেখে জানা যাচ্ছে, বন্ড কেনার নিরিখে প্রথম ৩০টি সংস্থার মধ্যে ১৪ টিতেই গত কয়েকবছরে তল্লাশি চালিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা।
কমিশনের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বন্ড কেনায় শীর্ষে রয়েছে ‘ফিউচার গেমিং এবং হোটেল সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড’ নামের একটি সংস্থা। মোট ১,৩৬৮ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড কিনেছে সংস্থাটি। এটি লটারি ব্যবসায়ী মার্টিন সান্তিয়াগোর সংস্থা বলে জানা গেছে। মূলত দক্ষিণ ভারতে লটারি ব্যবসা শুরু করলেও এই মুহূর্তে উত্তর-পুর্ব ভারত এমনকি নেপাল ও ভুটানেও তাঁর লটারি ব্যবসা ছড়িয়ে রয়েছে।
এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তেলুগু ব্যবসায়ী কৃষ্ণা রেড্ডির সংস্থা ‘মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড’। তারা ৯৬৬ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড কিনেছে। ৪১০ কোটি টাকার বন্ড কিনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মহারাষ্ট্রের ‘কুইক সাপ্লাই চেন প্রাইভেট লিমিটেড’
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক শীর্ষ ১০ নির্বাচনী বন্ড ক্রেতা –
১) ফিউচার গেমিং এবং হোটেল সার্ভিসেস – ১,৩৬৮ কোটি টাকা
২) মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড - ৯৬৬ কোটি টাকা
৩) কুইক সাপ্লাই চেন প্রাইভেট লিমিটেড - ৪১০ কোটি টাকা
৪) বেদান্ত লিমিটেড – ৪০০ কোটি টাকা
৫) হলদিয়া এনার্জি লিমিটেড – ৩৭৭ কোটি টাকা
৬) ভারতী গ্রুপ – ২৪৭ কোটি টাকা
৭) এসেল মাইনিং অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড – ২২৪ কোটি টাকা
৮) ওয়েস্টার্ন ইউপি পাওয়ার ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড – ২২০ কোটি টাকা
৯) কেভেন্টার ফুডপার্ক ইনফ্রা লিমিটেড – ১৯৫ কোটি টাকা
১০) মদনলাল লিমিটেড - ১৮৫ কোটি টাকা
তালিকায় শীর্ষে থাকা প্রথম দুটি সংস্থাতেই তল্লাশি চালিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। ২০১৯ সালে ‘ফিউচার গেমিং এবং হোটেল সার্ভিসেস’-এর বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করে ইডি। ঐ বছরের জুলাই মাসে কোম্পানির ২৫০ কোটি টাকার সম্পত্তি অ্যাটাচ করেছিল ইডি। ২০২২ সালের ২ এপ্রিল আরও ৪১০ কোটি টাকার অস্থাবর সম্পত্তি অ্যাটাচ করে ইডি। এর ৫ দিন পর ৭ এপ্রিল ১০০ কোটি টাকার ইলেক্টোরাল বন্ড কেনে ফিউচার গেমিং এবং হোটেল সার্ভিসেস। এরপর তদন্ত আচমকা থামিয়ে দেয় কেন্দ্রীয় সংস্থাটি।
দ্বিতীয় স্থানে থাকা মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার সংস্থার একাধিক অফিসে ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে হানা দেয় আয়কর দফতর। পঞ্চম স্থানে থাকা হলদিয়া এনার্জিতে ২০২০ সালের মার্চ মাসে হানা দেয় সিবিআই। ২০২২ সালের অগস্ট মাসে বেদান্ত লিমিটেডে তল্লাশি চালায় ইডি।
নির্বাচনী অনুদান প্রাপকদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে বিজেপি। ৬,০৬০ কোটি টাকা রাজনৈতিক অনুদান হিসাবে পেয়েছে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দলটি। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস, ১,৬০৯ কোটি টাকা অনুদান পেয়েছে তারা। কংগ্রেস পেয়েছে ১,৪২২ কোটি টাকা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন