মোদী সরকার ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার সময় থেকে তাঁর বন্ধুদের দেওয়া মোট ৬.১১ লক্ষ কোটি টাকা কর্পোরেট ঋণ মকুব করে দিয়েছে। সোমবার এক ট্যুইট বার্তায় এই অভিযোগ করেছেন সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।
তাঁর এদিনের ট্যুইটে ইয়েচুরি বলেন – এটাই আমাদের জাতীয় সম্পদের লুট। এই ঋণখেলাপীদের কাছ থেকে লুটের সমস্ত টাকা উদ্ধার করে সাধারণ মানুষের কল্যাণে লাগানো হোক।
তাঁর এদিনের ট্যুইটের সঙ্গে মহারাষ্ট্র স্টেট ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের কিছু তথ্য শেয়ার করেছেন।
অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সংশ্লিষ্ট এই সংগঠন জানিয়েছেন ২০১৪-১৫ আর্থিক বছর থেকে ২০১৯-২০ আর্থিক বছর পর্যন্ত মোট ৬,১০,৬৬৮ লক্ষ কোটি টাকা কর্পোরেট ঋণ মকুব করে দেওয়া হয়েছে।
এই সংগঠনের হিসেব অনুসারে ২০১৪-১৫ আর্থিক বছরে কর্পোরেট ঋণ মকুব করা হয়েছে ২৬,৪০৭ লক্ষ কোটি টাকা।
২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে কর্পোরেট ঋণ মকুব করা হয়েছে ৩৯,১৩১ লক্ষ কোটি টাকা।
২০১৬-১৭ আর্থিক বছরে কর্পোরেট ঋণ মকুব করা হয়েছে ৫৪,১৫২ লক্ষ কোটি টাকা।
২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে কর্পোরেট ঋণ মকুব করা হয়েছে ১,২৯,৫০৪ লক্ষ কোটি টাকা।
২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে কর্পোরেট ঋণ মকুব করা হয়েছে ১,৮৩,১৬৩ লক্ষ কোটি টাকা।
২০১৯-২০ আর্থিক বছরে কর্পোরেট ঋণ মকুব করা হয়েছে ১,৭৮,৩০৩ লক্ষ কোটি টাকা।
প্রসঙ্গত, গত বছরের এপ্রিল মাসে ভারতের ৫০ জন শীর্ষ ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের কারণে দেশীয় ব্যাঙ্কগুলির মোট ৬৭,৬০৭ কোটি টাকা ঋণ মকুব করা হয়েছে বলে জানিয়েছিলো আরবিআই। এক আরটিআইয়ের জবাবে একথা জানিয়েছিলো ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক। ওই বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি বিশিষ্ট আরটিআই অ্যাক্টিভিস্ট সাকেত গোখলে দেশের ৫০ জন শীর্ষ ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপির নাম এবং তাঁদের ঋণের বর্তমান পরিস্থিতি বিস্তারিত জানতে চেয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে একটি আরটিআই করেছিলেন। সেই আরটিআইয়ের জবাবে একথা জানায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
আরবিআই প্রদত্ত ওই তালিকায় ৫০ জন শীর্ষ ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের মধ্যে প্রথম স্থানে ছিলেন গীতাঞ্জলি জেমস্ লিমিটেডের কর্ণধার মেহুল চোকসি, ঋণের পরিমাণ ৫,৪৯২ কোটি টাকা। ৪,০৭৬ কোটি ঋণ নিয়ে তালিকায় এরপরেই ছিলো যতীন মেহতার উইনসোম হীরা এবং জুয়েলারী কোম্পানি। এই কোম্পানির জালিয়াতির বিরুদ্ধে তদন্ত করছে সিবিআই। লেখার সামগ্রী তৈরির কোম্পানি রোটোম্যাক গ্লোবাল প্রাইভেট লিমিটেডের ঋণের পরিমাণ ২,৮৫০ কোটি টাকা।
এছাড়াও আরটিআই অনুযায়ী বাকি কোম্পানিগুলোর নেওয়া ঋণের পরিমাণ পাঞ্জাবের কুদোস চেমি (২৩২৬ কোটি), রামদেব ও বালকৃষ্ণের রুচি সোয়া ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেড (২,২১২ কোটি), গোয়ালিয়রের জুম ডেভেলপার্স প্রাইভেট লিমিটেড (২,০১২ কোটি টাকা)।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন